“তুমরা যতোজন আমার তরিকায় চলতায় চাও, আমি তুমরারে কইরাম, তুমরা যারযির দুশমনরেও মহব্বত করিও। যেরা তুমরারে ঘিন্নায়, তুমরা তারার ভালাই করিও। যেরা তুমরার লাগি লান্নত মাংগে, তুমরা তারার লাগি রহমত চাইও। আর যেরা তুমরার বদনাম করে, তুমরা তারার লাগি দোয়া করিও। যে তুমার এক গালো চড় মারে, তারে আরক গাল পাতিয়া দিও। যে তুমার চাদ্দর কাড়িয়া নিতো চায়, তারে কোর্তাও খুলিয়া দিও। যারা তুমার গেছে চায়, তারারে দিও। কেউ তুমার কুনু চিজ নিলেগি, তার গেছে আর ফিরত চাইও না। হুনো, তুমরা মানষর গেছ থাকি যেলাখান বেবহার পাইতায় চাও, তুমরাও হকলর লগে অউ লাখান বেবহার করো।
“যারা তুমরারে মায়া করে, তুমরা যুদি খালি তারারেউ মায়া করো, তে তুমরা বাহবা পাইতায় কিলা? ইলা তো নাফরমান অকলেও একে-অইন্যরে মায়া করে। আর যারা তুমরার ভালাই করে, তুমরা যুদি খালি তারার ভালাই করো, তে বাহবা পাইবায় কিলা? নাফরমান অকলেও তো ইলা করে। যে মানষর গেছ থাকি তুমরা করজো পাইবার আশা আছে, তুমরা যুদি খালি তারেউ করজো দেও, তে কিলা বাহবা পাইবায়? নাফরমান অকলেও একে-অইন্যরে ইলা করজো দেয়, হে আশা করে বিপদো পড়লে হে-ও হন থাকি করজো পাইবো। তে আমি তুমরারে কইরাম, তুমরা যারযির দুশমনরেও মায়া করিও, তারার ভালাই করিও। বদলা পাওয়ার আশা না করিয়া করজো দিও, তেউ তুমরার লাগি বড় বখশিশ আছে। তুমরা আল্লা পাকর আওলাদ বনবায়। তাইন তো নিমক-হারাম আর খারাপ মানষরেও দয়া করইন। তুমরার নিরাকার বাফ যেলা দয়াল, তুমরাও অলান দয়াল অও।
“মানষর বিচার করিও না, তেউ তুমরাও বিচারর দাড়ো পড়তায় নায়। কেউররে দুষি সাইবস্তো করিও না, তেউ তুমরাও দুষি অইতায় নায়। মাফ করিয়া দিও, তেউ তুমরাও মাফি পাইবায়। দান-খয়রাত দেও, তেউ তুমরারেও দেওয়া অইবো। মানষে জাতাই জাতাই ভরিয়া আনিয়া তুমরার গাটিত বান্দিয়া দিবা। তুমরা যেলা মাপিয়া দিবায়, তুমরার লাগিও অলা মাপা অইবো।”
বাদে ইছায় তারারে অউ কিচ্ছা হুনাইলা, “এক আন্দায় কুনু আরক আন্দারে পথ দেখাইতো পারে নি? তে দুইওজনউ গাতো পড়তো নায় নি? সাগরিদ উস্তাদ থাকি বড় নায়, অইলে যে সাগরিদে পুরাপুর তালিম লয়, হে-ও উস্তাদর লাখান বনিযায়। তুমার ভাইর চখুত গুড়া হামাইছে অখানউ দেখরায়, অইলে নিজর চউখো গাছর চেলি আছে ইতা দেখরায় না? তুমার চখুত চেলি হামাইছে ইখান না চাইয়া তুমার ভাইরে কিলা কইবায়, ভাইছাব, তুমার চউখো যে গুড়া পড়ছে, আও, অগু বার করিয়া দেই। তুমার নিজর চখুর চেলিউ তো দেখরায় না। ও ভন্ড, পয়লা তুমার নিজর চউখ থাকি চেলি হরাও, তেউ ভাইর চউখ থাকি গুড়া বার করাত লাগলে ভালা করি দেখতায় পারবায়। ভালা গাছে তো মন্দ ফল ধরে না, আর মন্দ গাছে ভালা ফল ধরে না। ফল দেখিয়া গাছ চিনা যায়। মানষে তো রিফুজি লত থাকি বরই পাড়ে না, বা ছুতরা গাছ থাকি আংগুর পাড়ে না। ভালা মানষর দিলর নেক ভান্ডার থাকি ভালাই বারয়, আর বদ মানষর বদ দিল থাকি বদউ বারয়। মানষর দিলর ভান্ডারো যেতা জমা আছে, অতা থাকিউ তো জবানর বুলি বারয়।
“তুমরা কেনে আমারে খালি হুজুর হুজুর কইরায়, অথচ আমি যেতা কই, ইতা মানো না? আমার কান্দাত আইয়া আমার বয়ান হুনিয়া যে জনে আমল করে, হে কার লাখান, আমি তুমরারে কইরাম। হে অউ মানষর লাখান, যে ঘর বানানির নিয়তে গইন করি মাটি খুদিয়া মজবুত করি ঘরর খুটি বানাইলো, বাদে বইন্যা আইলো আর পানির ফুতে অউ ঘররে ঠেলিলো, অইলে ইখান লড়াইতো পারলো না, ইখান তো মজবুত করি বানাইল। আর আমার বয়ান হুনিয়া যে জনে আমল না করে, হে অউ লাখান মানুষ, যেগিয়ে গাত না খুদিয়া খালি নরম মাটির উপরে ঘর বানাইলো, বাদে বানর ফুতর ধাক্কায় তার ঘর পড়িয়া ভাংগিয়া চুরমার অইগেল।”