YouVersion Logo
Search Icon

২ বাদশাহ্‌নামা 6

6
কুড়ালের ফলা ভেসে উঠল
1এক দিন শাগরেদ-নবীরা আল-ইয়াসাকে বললেন, “দেখুন, যে জায়গায় আমরা আপনার সংগে বসে আলোচনা করি সেই জায়গাটা আমাদের জন্য খুবই ছোট। 2আপনি অনুমতি দিলে আমরা জর্ডান নদীর কাছে গিয়ে প্রত্যেকে একটা করে খুঁটি যোগাড় করে নিয়ে সেখানে আমাদের জন্য একটা থাকবার জায়গা তৈরী করব।”
তিনি বললেন, “আচ্ছা, যাও।”
3তখন তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, “আপনিও আপনার গোলামদের সংগে চলুন।”
জবাবে আল-ইয়াসা বললেন, “আচ্ছা, চল।” 4এই বলে তিনি তাঁদের সংগে গেলেন।
তাঁরা জর্ডানের কাছে গিয়ে গাছ কাটতে লাগলেন। 5তাঁদের মধ্যে একজন যখন গাছ কাটছিলেন তখন তাঁর কুড়ালের লোহার ফলাটা পানির মধ্যে পড়ে গেল। তিনি চিৎকার করে বললেন, “হায়, হায়! হে হুজুর, ওটা যে আমি ধার করে এনেছিলাম।”
6তখন আল্লাহ্‌র বান্দা জিজ্ঞাসা করলেন, “ওটা কোথায় পড়েছে?” তিনি জায়গাটা দেখিয়ে দিলে পর আল-ইয়াসা একটা কাঠ কেটে নিয়ে সেখানে ছুঁড়ে ফেললেন এবং তাতে লোহার ফলাটা ভেসে উঠল। 7তখন তিনি বললেন, “ওটা তুলে নাও।” তাই লোকটি হাত বাড়িয়ে সেটা তুলে নিলেন।
সিরীয় সৈন্যেরা অন্ধ হল
8সেই সময় সিরিয়ার বাদশাহ্‌ ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। তিনি তাঁর সেনাপতিদের সংগে পরামর্শ করে বললেন, “অমুক অমুক জায়গায় আমি ছাউনি ফেলব।”
9তখন আল্লাহ্‌র বান্দা ইসরাইলের বাদশাহ্‌কে বলে পাঠালেন, “সাবধান, অমুক জায়গায় যাবেন না, কারণ সিরীয়রা সেখানে যাচ্ছে।” 10এতে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ আল্লাহ্‌র বান্দার নির্দেশ-করা জায়গাটায় লোক পাঠিয়ে লোকদের সাবধান করে দিলেন। এইভাবে বাদশাহ্‌ বারবার নিজেকে রক্ষা করতেন।
11এতে সিরিয়ার বাদশাহ্‌ ভীষণ রেগে গেলেন। তাঁর সেনাপতিদের ডেকে তিনি বললেন, “বল, আমাদের মধ্যে কে ইসরাইলের বাদশাহ্‌র পক্ষে রয়েছে?”
12তাঁর সেনাপতিদের মধ্যে একজন বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমাদের মধ্যে কেউই না; কিন্তু আপনি শোবার ঘরে যে কথা বলেন সেই কথা পর্যন্ত ইসরাইলের নবী আল-ইয়াসা ইসরাইলের বাদশাহ্‌কে বলে দেন।”
13তখন বাদশাহ্‌ এই হুকুম দিলেন, “সে কোথায় আছে তোমরা গিয়ে তা তালাশ করে বের কর যাতে লোক পাঠিয়ে আমি তাকে ধরে আনতে পারি।” পরে খবর আসল যে, তিনি দোথনে আছেন। 14বাদশাহ্‌ তখন ঘোড়া, রথ ও একটা বড় সৈন্যদল সেখানে পাঠিয়ে দিলেন। তারা রাতের বেলায় গিয়ে শহরটা ঘেরাও করল।
15পরের দিন খুব ভোরে আল্লাহ্‌র বান্দার চাকর উঠে যখন বাইরে গেল তখন সে দেখতে পেল ঘোড়া ও রথ নিয়ে একদল সৈন্য শহর ঘেরাও করে ফেলেছে। সেই চাকর তখন বলল, “হায়, হায়! হে হুজুর, আমরা কি করব?”
16জবাবে নবী বললেন, “ভয় কোরো না। যারা আমাদের সংগে আছে তারা ওদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী।”
17তারপর আল-ইয়াসা এই মুনাজাত করলেন, “হে মাবুদ, তার চোখ খুলে দাও যেন সে দেখতে পায়।” তখন মাবুদ সেই চাকরের চোখ খুলে দিলেন। সে চেয়ে দেখতে পেল আল-ইয়াসার চারপাশে পাহাড়গুলো আগুনের রথ ও ঘোড়ায় ভরা।
18শত্রুরা যখন আল-ইয়াসার দিকে নেমে আসছিল তখন তিনি মাবুদের কাছে এই মুনাজাত করলেন, “এই লোকগুলোকে তুমি আলোর ঝলকে অন্ধ করে দাও।” আল-ইয়াসার মুনাজাত অনুসারে মাবুদ তাদের অন্ধ করে দিলেন।
19আল-ইয়াসা তাদের বললেন, “এটা সেই রাস্তাও নয় এবং সেই শহরও নয়। তোমরা আমার পিছনে পিছনে এস; যে লোকের তালাশ তোমরা করছ আমি তার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব।” এই বলে তিনি সামেরিয়াতে তাদের নিয়ে গেলেন।
20শহরে ঢুকবার পর আল-ইয়াসা বললেন, “হে মাবুদ, এবার ওদের চোখ খুলে দাও যেন ওরা দেখতে পায়।” তখন মাবুদ তাদের চোখ খুলে দিলেন আর তারা দেখতে পেল যে, তারা সামেরিয়ার মধ্যে গিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
21ইসরাইলের বাদশাহ্‌ তাদের দেখে আল-ইয়াসাকে বললেন, “পিতা, আমি কি ওদের হত্যা করব?”
22জবাবে তিনি বললেন, “না, ওদের মারবেন না। আপনার নিজের তলোয়ার ও ধনুক দিয়ে আপনি যাদের বন্দী করেছেন তাদের কি হত্যা করবেন? ওদের আপনি খাবার ও পানি দিন, যাতে তারা খেয়েদেয়ে তাদের মালিকের কাছে ফিরে যেতে পারে।” 23কাজেই বাদশাহ্‌ তাদের জন্য একটা বড় মেজবানীর আয়োজন করলেন। তারা খাওয়া-দাওয়া শেষ করলে পর তিনি তাদের বিদায় করে দিলেন আর তারা তাদের মালিকের কাছে ফিরে গেল। এতে সিরিয়ার সৈন্যদল ইসরাইলের রাজ্যের মধ্যে লুটপাট করা বন্ধ করে দিল।
সামেরিয়ায় দুর্ভিক্ষ
24এর কিছুকাল পরে সিরিয়ার বাদশাহ্‌ বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সৈন্যদল জমায়েত করলেন এবং তাদের নিয়ে গিয়ে সামেরিয়া ঘেরাও করলেন। 25তখন শহরে ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। এই ঘেরাও এতদিন ধরে চলল যে, একটা গাধার মাথা পর্যন্ত প্রায় এক কেজি রূপাতে এবং এক কেজির চার ভাগের এক ভাগ কবুতরের পায়খানা সাত গ্রাম রূপায় বিক্রি হতে লাগল।
26ইসরাইলের বাদশাহ্‌ একদিন যখন শহরের দেয়ালের উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন একজন স্ত্রীলোক চিৎকার করে তাঁকে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমাকে সাহায্য করুন।”
27জবাবে বাদশাহ্‌ বললেন, “মাবুদ যদি সাহায্য না করেন তবে আমি কোথা থেকে তোমাকে সাহায্য করব? খামার থেকে, না আংগুর মাড়াইয়ের যন্ত্র থেকে?” 28তারপর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি হয়েছে?”
স্ত্রীলোকটি বলল, “এই স্ত্রীলোকটি আমাকে বলেছিল, ‘আজ তোমার ছেলেকে আমাদের খেতে দাও, কাল আমরা আমার ছেলেকে খাব।’ 29কাজেই আমরা আমার ছেলেকে রান্না করে খেয়েছি। পরের দিন আমি তাকে বললাম, ‘এবার তোমার ছেলেকে আমাদের খেতে দাও।’ কিন্তু সে তাকে লুকিয়ে রেখেছে।”
30স্ত্রীলোকটির কথা শুনে বাদশাহ্‌ তাঁর পোশাক ছিঁড়লেন। তিনি তখনও দেয়ালের উপর দিয়ে হাঁটছিলেন। তাতে লোকেরা দেখতে পেল যে, তাঁর পোশাকের তলায় তিনি ছালার চট পরে আছেন। 31তিনি বললেন, “আজ যদি শাফটের ছেলে আল-ইয়াসার মাথা তাঁর কাঁধের উপর থাকে তবে আল্লাহ্‌ যেন আমাকে শাস্তি দেন, আর তা ভীষণভাবেই দেন!”
32আল-ইয়াসা তখন তাঁর ঘরে বসে ছিলেন আর তাঁর সংগে ছিলেন বৃদ্ধ নেতারা। বাদশাহ্‌ একজন লোককে আল-ইয়াসার কাছে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু লোকটা সেখানে পৌঁছাবার আগেই আল-ইয়াসা বৃদ্ধ নেতাদের বললেন, “আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন না সেই খুনী আমার মাথা কেটে ফেলবার জন্য কিভাবে একজন লোককে পাঠাচ্ছে? দেখুন, লোকটা আসলে পর আপনারা দরজাটা বন্ধ করে দেবেন এবং তার সামনে দরজাটা বন্ধই রাখবেন। তার পিছন পিছন কি তার মালিকের পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে না?”
33আল-ইয়াসা তখনও কথা বলছেন এমন সময় সেই লোকটি তাঁর কাছে আসল। তারপর বাদশাহ্‌ এসে বললেন, “এই বিপদ মাবুদের কাছ থেকেই এসেছে। তবে মাবুদের জন্য আর আমি দেরি করব কেন?”

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy