YouVersion Logo
Search Icon

যিরমিয় ভাববাদীর পুস্তক 7

7
মন্দিরে যিরমিয়র ধর্মপোদেশ
1এ হল যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: 2“যাও যিরমিয়, প্রভুর গৃহের দরজায় দাঁড়িয়ে এই ধর্মোপদেশ দাও:
“‘যিহূদার লোকরা, এই সেই প্রভুর বার্তা। তোমরা সবাই যারা এই ফটকগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রভুকে উপাসনা করতে আসো, তারা এই বার্তা শোন। 3ইস্রায়েলের লোকদের কাছে প্রভুই হলেন ঈশ্বর। প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: তোমরা তোমাদের জীবনযাত্রা বদলে ফেল। সৎ‌ কাজ করো। যদি তোমরা তা করো তাহলে তোমাদের আমি এখানে বাস করতে দেব। 4মিথ্যেবাদীদের বিশ্বাস করো না। তারা বলে, “এই হল প্রভুর মন্দির স্থান।” 5তোমরা যদি সত্যিই তোমাদের জীবন ধারা বদলাও এবং ভালো কর্মসমূহ কর এবং তোমরা যদি পরস্পরের প্রতি সৎ‌ ও পক্ষপাতহীন থাকো, আমি তোমাদের এখানে থাকতে দেব। 6বিদেশী ব্যক্তিদের প্রতিও সৎ‌ থেকো। বিধবা এবং অনাথ শিশুদের উপকার করো। তাদের প্রতি সুবিচার করো। নিরীহ মানুষদের হত্যা করো না। আর অন্য কোন দেবতাদের অনুসরণ কোরো না। কারণ তারা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে। 7যদি তোমরা আমাকে মেনে চলো তাহলে আমি তোমাদের এখানে বাস করতে দেব। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের চিরকাল বসবাসের জন্য এই জমি দিয়েছিলাম।
8“‘কিন্তু তোমরা মূল্যহীন মিথ্যায় তোমাদের আস্থা স্থাপন করো। 9তোমরা কি খুনী অথবা চোর হতে চাও? তোমরা কি ব্যভিচারের পাপ গায়ে মাখতে চাও? তোমরা কি মিথ্যে অভিযোগে অন্যদের ফাঁসাতে চাও? তোমরা কি বালের মূর্ত্তি এবং অন্য দেবতাদের যাদের তোমরা জানো না তাদের পূজা করতে চাও? 10তোমরা যদি এ সব পাপগুলো করো, তাহলে কি তোমরা এই গৃহের ভেতর, যেটি আমার নামে অভিহিত সেখানে আসতে পারবে এবং আমার সামনে এসে দাঁড়াতে পারবে? তোমরা কি মনে করো আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমরা বলবে, “আমরা সুরক্ষিত” তাই আমরা এই ধরণের ভয়ঙ্কর কাজ করব? 11আরাধনার এই জায়গাটি আমার নামে নামাঙ্কিত। এই মন্দির কি তোমাদের কাছে ডাকাতদের গোপন ডেরা ছাড়া আর বেশী কিছু নয়? আমি তোমাদের লক্ষ্য করে যাচ্ছি।’” এই ছিল প্রভুর বার্তা।
12“‘যিহূদার লোকরা, তোমরা এখন শীলো শহরে চলে যাও। সেই স্থানে যাও যেখানে আমি আমার প্রথম নামাঙ্কিত বাড়িটি তৈরী করেছিলাম। যাও, গিয়ে দেখে এসো, আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মন্দ কাজের জন্য আমি ঐ জায়গার কি অবস্থা করেছি। 13এবং আমি এগুলো করব কারণ তোমরা এগুলো সব করছিলে। এই হল প্রভুর বার্তা। আমি তোমাদের সঙ্গে বারে বারে কথা বলেছি। কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে চাও নি। আমি তোমাদের ডেকেছিলাম কিন্তু তোমরা কোন উত্তর দাও নি। 14তাই জেরুশালেমে অবস্থিত আমার নামাঙ্কিত গৃহ আমি নিজেই ধ্বংস করে দেব, ঠিক শীলো শহরের উপাসনালয়ের ক্ষেত্রে যেমন আমি করেছিলাম। জেরুশালেমের সেই মন্দিরকে, যেটি আমার নামে অভিহিত, সেটিকে তোমরা বিশ্বাস কর। আমি সেই জায়গা তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম। 15ইফ্রয়িম থেকে তোমাদের সব ভাইদের যেমন ছুঁড়ে ফেলেছিলাম তেমনি তোমাদেরও আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব।’
16“যিরমিয়, কখনও তুমি যিহূদার লোকের হয়ে প্রার্থনা করবে না। ওদের সাহায্যের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করো না। আমি তাহলে ইচ্ছে করে তোমার সেই প্রার্থনা শুনব না। 17আমি জানি তুমি লক্ষ্য রাখছো যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তায় তারা কি করে। 18যিহূদার লোকরা যা করেছে তা হল এই রকম: ছেলেমেয়েরা কাঠ জড়ো করছে। আর পিতারা সেই কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছে। মহিলারা ময়দা মাখছে, পিঠা, রুটি বানাচ্ছে স্বর্গের রানীকে নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য। যিহূদার এইসব মানুষ অন্য মূর্ত্তিদের পূজার জন্য পেয় নৈবেদ্য ঢালছে। তারা এগুলি করছে আমাকে ক্রুদ্ধ করার জন্য। 19কিন্তু আমি সত্যিই সে জন নই যাকে যিহূদার লোকরা দুঃখ দিচ্ছে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরই আঘাত করছে এবং নিজেদের লজ্জায় ফেলছে।”
20তাই প্রভু বললেন, “আমি আমার ক্রোধ এই জায়গার বিরুদ্ধে দেখাবো। এখানকার প্রত্যেক মানুষ এবং পশুকে শাস্তি দেব। শাস্তি দেব গাছ এবং ক্ষেতের শস্যকে। আমার ক্রোধ হবে তপ্ত আগুনের মতো, যা নেভাবার ক্ষমতা কারো নেই।”
বলি নয়, প্রভু আরো বেশী আজ্ঞানুবর্তীতা চান
21ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যাও তোমরা যতখুশী চাও হোমবলি উৎসর্গ কর। যত খুশী ঐ উৎসর্গগুলোর মাংস খাও। 22আমিই মিশর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু তাদের হোমবলি বা উৎসর্গের আদেশ দিইনি। 23আমি শুধু তাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম যে, ‘আমাকে মান্য করো এবং আমিই তোমাদের ঈশ্বর হব এবং তোমরা হবে আমার লোক। আমার আদেশ পালন করো এবং তোমাদের ভালো হবে।’
24“কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি। তারা আমার প্রতি একেবারেই মনোযোগ দেয়নি। তারা ছিল একগুঁয়ে, জেদী। সুতরাং তারা যা খুশী তাই করেছিল। তারা কখনই ভাল হয়নি। তারা আরও শয়তান হয়ে সামনের দিকে না হেঁটে পিছনের দিকে হেঁটেছিল। 25তোমাদের পূর্বপুরুষরা মিশর ছেড়ে যাবার দিন থেকে এখন পর্যন্ত আমি তোমাদের কাছে ভৃত্যদের পাঠিয়েছিলাম। আমার ভৃত্যরা হল ভাববাদী। আমি তাদের বার বার তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি। 26কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি। আমার কথায় মনোযোগ দেবার জন্য তাদের কান পাতেনি। জেদের বশে তারা তাদের পিতাদের চেয়েও আরও বেশী করে অসৎ‌ কাজ করেছে।
27“যিরমিয়, তুমি যিহূদার লোকদের এই কথাগুলি বলবে। কিন্তু তারা তোমার কথা শুনবে না। তুমি তাদের ডাকলে তারা উত্তর দেবে না। 28সুতরাং তোমাকে বলতেই হবে: এই দেশ প্রভু ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলেনি। এই জাতির লোকরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোনেনি। সত্যিকারের শিক্ষা কাকে বলে এরা জানে না।”
গণহত্যার উপত্যকা
29“যিরমিয়, তুমি তোমার চুল কেটে ফেল এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দাও। তারপর অনাবৃত পাহাড়ের চূড়ায় ওঠ এবং আর্ত্তনাদ করে কাঁদো। কারণ, প্রভু এই প্রজন্মের লোকদের প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন। 30তুমি এগুলো করো কারণ আমি দেখেছি যে যিহূদার লোকরা শয়তানি কাজ করে চলেছে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা তাদের মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। এবং আমি সেই সব মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি। তারা আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে এই মূর্ত্তিগুলি প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা আমার গৃহ ‘অপবিত্র’ করেছে। 31তারা বেনহিন্নোম উপত্যকায় তোফত নামক সুউচ্চ স্থান নির্মাণ করেছে। এইসব জায়গার লোকেরা তাদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের হত্যা করেছে। তারা তাদের হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ করেছে। কিন্তু আমি তাদের এই দুষ্ট কাজ করতে আদেশ দিইনি। আমি এমন একটা জিনিষের কথা কখনও ভাবিইনি। 32তাই আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। এমন দিন আসছে যেদিন লোকে এই জায়গাকে তোফৎ বা বেনহিন্নোমের উপত্যকা বলে আর ডাকবে না। তারা একে গণহত্যার উপত্যকা বলে ডাকবে। তারা এরকম একটি নামকরণ করবে কারণ তারা তোফতে মৃতদেহ কবর দেবে যতক্ষণ পর্যন্ত আর কোন মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা না থাকে। 33মৃতদেহগুলি খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকবে। আর সেই মৃতদেহগুলি ছিঁড়ে খাবে আকাশের শকুন ও বনের পশুরা। ঐ শকুন ও পশুদের তাড়া করার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না। 34আমি জেরুশালেমের রাস্তা থেকে এবং যিহূদার শহরগুলি থেকে সমস্ত সুখ এবং আনন্দ কেড়ে নেব। ঐ জায়গাগুলিতে আর কখনও বর ও কনের গলা শোনা যাবে না। দেশটি মরুভূমিতে পরিণত হবে।”

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy