রোমীয় ভূমিকা
ভূমিকা
রোমীয় ভক্তমণ্ডলীর কাছে প্রেরিত শিষ্য পৌলের এই পত্রটির রচনাকাল সম্ভবতঃ 57-58 খ্রীষ্টাব্দ। পৌল প্যালেষ্টাইন থেকে আরম্ভ করে এশিয়া মাইনর, সিরিয়া, গ্রীস ইত্যাদি দেশের প্রধান প্রধান নগর-জনপদ ঘুরে প্রভু যীশুর বাণী প্রচার করে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী প্রতিষ্ঠা করেন। এবার তাঁর অভিপ্রায় স্পেনে যাবার। সেখানে যাবার পথে তিনি রোম নগরে সেখানকার খ্রীষ্টভক্তদের সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করবেন এবং তারপর তাদের সহায়তায় তিনি স্পেনে যাবেন, এই ছিল তাঁর পরিকল্পনা। সেইজন্য রোম যাত্রার পূর্বে রোমীয় মণ্ডলীর কাছে তিনি এই পত্রটি লেখেন। এই পত্রে পৌল খ্রীষ্টীয় বিশ্বাস সম্বন্ধে তাঁর উপলব্ধি ও বাস্তব জীবনে এই বিশ্বাসের প্রয়োগ সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। খ্রীষ্টীয় ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি পৌলের চিন্তা-ভাবনা ও বিশেষ ধারণার কথা পত্রটিতে প্রতিফলিত হয়েছে।
রোমীয় মণ্ডলীর ভক্তদের প্রীতিসম্ভাষণ জানানোর পর পৌল তাঁর পত্রের মূল কথাটি বলেছেনঃ মানুষের উদ্ধারের ঐশ্বরিক পন্থা এই সুসমাচারের মধ্য দিয়েই অভিব্যক্ত, এই পন্থা সর্বতোভাবে বিশ্বাসভিত্তিক। শাস্ত্রে একথা লেখা আছে, ‘বিশ্বাসের বলে যে ধার্মিক, সে-ই বাঁচবে’ (1:17)।
তারপর পৌল এই মূল কথাটি পর্যায়ক্রমে ব্যাখ্যা করেছেন। বলেছেন, ইহুদী-অইহুদী নির্বিশেষে মানুষ মাত্রই পাপী। পাপের ফলে ঈশ্বরের সঙ্গে মানুষের বিচ্ছেদ ঘটেছে। এই বিচ্ছেদের অবসান ঘটিয়ে মিলন সম্ভব হতে পারে একমাত্র যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে। এরপর পৌল ব্যাখ্যা করেছেন খ্রীষ্টের সঙ্গে সংযোগে অপূর্ব এক নবজীবন যা ঈশ্বরের সঙ্গে স্থাপিত নতুন সম্পর্কের ফলে সম্ভব হতে পারে। ঈশ্বরের সঙ্গে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর পুনর্মিলনে শান্তি বিরাজ করে এবং পাপ ও মৃত্যুর অধীনতা পাশ থেকে ঈশ্বরের আত্মা তাকে মুক্তিদান করেন। 5 থেকে 8 অধ্যায়ে পৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর জীবনে ঈশ্বরের বিধান এবং ঈশ্বরের আত্মার শক্তির উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। তারপর তিনি মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের পরিকল্পনায় ইহুদী ও অইহুদীদের কিভাবে একত্রে সন্নিবেশ করা যেতে পারে —এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করেছেন। উপসংহারে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের অনুগ্রহের পরিসরের মধ্যে সমগ্র মানবজাতিকে আনার জন্যই ঈশ্বরের পরিকল্পনার একটি অংশরূপে ইহুদীরা যীশুকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ইহুদীরা চিরদিনই এভাবে যীশুকে প্রত্যাখ্যান করবে না। একদিন না একদিন তাদের ভুল ভাঙবে।
পরিশেষে পৌল খ্রীষ্টানের জীবনচর্যা সম্বন্ধে লিখেছেন, বিশেষভাবে, আত্মীয়-পরিজন ও পরিবারের সঙ্গে যারা সম্পর্কিত নয়, এমন মানুষের সঙ্গে খ্রীষ্টানের ভালবাসার রূপ কেমন হবে, এ সম্পর্কে তাঁর পত্রে লিখে জানিয়েছেন। ঈশ্বরের সেবা, দেশের প্রতি খ্রীষ্টানের কর্তব্য এবং পরস্পরের প্রতি কর্তব্য ও বিবেকের প্রশ্ন নিয়ে প্রেরিত শিষ্য তাঁর পত্রে আলোচনা করেছেন। তিনি তাঁর পত্র শেষ করেছেন ব্যক্তিগত সংবাদ এবং ঈশ্বরের মহিমা ও প্রশংসায়।
বিষয়বস্তুর রূপরেখা
সম্ভাষণ ও মূল বক্তব্যের অবতারণা 1:1-17
সর্বমানবের পরিত্রাণের প্রয়োজন 1:18—3:20
ঈশ্বর প্রদর্শিত মুক্তির পথ 3:21—4:25
খ্রীষ্টাশ্রিত মানুষের নূতন জীবন 5:18—8:39
ঈশ্বরের পরিকল্পনায় ইসরায়েল 9:1—11:36
খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জীবনচর্যা 12:1—15:13
উপসংহার ও ব্যক্তিগত প্রীতিসম্ভাষণ 15:14—16:27
Currently Selected:
রোমীয় ভূমিকা: BENGALCL-BSI
Highlight
Share
Copy

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.