YouVersion Logo
Search Icon

গণনা পুস্তক ১৪

১৪
1 পরে সমস্ত মণ্ডলী উচ্চৈঃস্বরে কলরব করিল, এবং লোকেরা সেই রাত্রিতে রোদন করিল। 2 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ সকলে মোশির বিপরীতে ও হারোণের বিপরীতে বচসা করিল, ও সমস্ত মণ্ডলী তাহাদিগকে কহিল, হায় হায়, আমরা কেন মিসর দেশে মরি নাই; এই প্রান্তরেই বা কেন মরি নাই? 3 সদাপ্রভু আমাদিগকে খড়্‌গধারে নিপাত করাইতে এ দেশে কেন আনিলেন? আমাদের স্ত্রী ও বালকগণ ত লুন্ঠিত হইবে। মিসরে ফিরিয়া যাওয়া কি আমাদের ভাল নয়? 4 পরে তাহারা পরস্পর বলাবলি করিল, আইস, আমরা একজনকে সেনাপতি করিয়া মিসরে ফিরিয়া যাই। 5 তাহাতে মোশি ও হারোণ ইস্রায়েল-সন্তানগণের মণ্ডলীর সমস্ত সমাজের সম্মুখে উবুড় হইয়া পড়িলেন। 6 আর যাঁহারা দেশ নিরীক্ষণ করিয়া আসিয়াছিলেন, তাঁহাদের মধ্যে নূনের পুত্র যিহোশূয় ও যিফূন্নির পুত্র কালেব আপন আপন বস্ত্র চিড়িলেন, 7 এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলীকে কহিলেন, আমরা যে দেশ নিরীক্ষণ করিতে গিয়াছিলাম, সে যার পর নাই উত্তম দেশ। 8 সদাপ্রভু যদি আমাদের উপর প্রীত হন, তবে তিনি আমাদিগকে সেই দেশে প্রবেশ করাইবেন, ও সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ আমাদিগকে দিবেন। 9 কিন্তু তোমরা কোন মতে সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হইও না, ও সেই দেশের লোকদিগকে ভয় করিও না; কেননা তাহারা আমাদের ভক্ষ্যস্বরূপ, তাহাদের আশ্রয়-ছত্র তাহাদের উপর হইতে নীত হইল, সদাপ্রভু আমাদের সহবর্তী; তাহাদিগকে ভয় করিও না। 10 কিন্তু সমস্ত মণ্ডলী সেই দুই জনকে প্রস্তরাঘাতে বধ করিতে বলিল। তখন সমাগম-তাম্বুতে সদাপ্রভুর প্রতাপ সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানের প্রত্যক্ষ হইল। 11 আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, এই লোকেরা কত কাল আমাকে অবজ্ঞা করিবে? এবং আমি ইহাদের মধ্যে যে সকল চিহ্ন-কার্য করিয়াছি, তাহা দেখিয়াও ইহারা কত কাল আমার প্রতি অবিশ্বাসী থকিবে? 12 আমি মহামারী দ্বারা ইহাদিগকে আঘাত করিব, ইহাদিগকে অধিকার-বঞ্চিত করিব, এবং তোমাকেই ইহাদের অপেক্ষা বৃহৎ ও বলবান জাতি করিব।
13 তাহাতে মোশি সদাপ্রভুকে কহিলেন, তাহা করিলে মিসরীয়েরা তাহা শুনিবে, কেননা তাহাদেরই মধ্য হইতে তুমি আপন শক্তি দ্বারা এই লোকদিগকে আনিয়াছ; 14 আর তাহারা এই দেশনিবাসী লোকদিগকেও তাহার সংবাদ দিবে। তাহারা শুনিয়াছে যে, তুমি সদাপ্রভু এই লোকদের মধ্যবর্তী, কারণ তুমি সদাপ্রভু ইহাদিগকে প্রত্যক্ষে দর্শন দিয়া থাক, আর তোমার মেঘ ইহাদের উপরে অবস্থিতি করিতেছে, এবং তুমি দিবাতে মেঘস্তম্ভে ও রাত্রিতে অগ্নিস্তম্ভে থাকিয়া ইহাদের অগ্রে অগ্রে গমন করিতেছ। 15 এখন যদি তুমি এই লোকদিগকে এক ব্যক্তির ন্যায় বধ কর, তবে ঐ যে জাতিগণ তোমার খ্যাতি শুনিয়াছে, 16 তাহারা বলিবে, সদাপ্রভু এই লোকদিগকে যে দেশ দিতে শপথ করিয়াছিলেন, সেই দেশে তাহাদিগকে প্রবেশ করাইতে অপারগ হইলেন; এই জন্য প্রান্তরে তাহাদিগকে সংহার করিলেন। 17 এখন নিবেদন করি, তোমার বাক্যানুসারে প্রভুর প্রভাব মহিমাম্বিত হউক; 18 তুমি ত বলিয়াছ, সদাপ্রভু ক্রোধে ধীর ও দয়াতে মহান এবং অধর্মের ও অপরাধের ক্ষমাকারী, তথাপি অবশ্য [পাপের] দণ্ড দেন, তিনি তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত সন্তানদের উপরে পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল বর্তান। 19 বিনয় করি, তোমার দয়ার মহত্ত্বানুসারে, এবং মিসর দেশ হইতে এই পর্যন্ত এই লোকদিগকে যেমন ক্ষমা করিয়া আসিতেছ, তদনুসারে এই লোকদের অপরাধ ক্ষমা কর। 20 তখন সদাপ্রভু কহিলেন, তোমার বাক্যানুসারে আমি ক্ষমা করিলাম। 21 সত্যই আমি জীবন্ত, এবং সমস্ত পৃথিবী সদাপ্রভুর প্রতাপে পরিপূর্ণ হইবে; 22 তাই যত লোক আমার প্রতাপ এবং মিসরে ও প্রান্তরে কৃত আমার চিহ্ন-কার্যসমূহ দেখিয়াছে, তথাচ এই দশ বার আমার পরীক্ষা করিয়াছে ও আমার রবে মনোযোগ করে নাই; 23 আমি তাহাদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয়ে দিব্য করিয়াছি, তাহারা সেই দেশ দেখিতে পাইবেই না; যাহারা আমাকে অবজ্ঞা করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে কেহই তাহা দেখিতে পাইবে না। 24 কিন্তু আমার দাস কালেবের অন্তরে অন্য আত্মা ছিল, এবং সে সম্পূর্ণরূপে আমার অনুগত হইয়া চলিয়াছে, এই নিমিত্তে সে যে দেশে গিয়াছিল, সেই দেশে আমি তাহাকে প্রবেশ করাইব, ও তাহার বংশ তাহা অধিকার করিবে। 25 পরন্তু অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা তলভূমিতে রহিয়াছে; কল্য তোমরা ফিরিয়া সূফ-সাগরের পথ দিয়া প্রান্তরে গমন কর।
26 পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, 27 আমার প্রতিকূলে বচসাকারী এই দুষ্ট মণ্ডলীর ভার আমি কতকাল সহ্য করিব? ইস্রায়েল-সন্তানগণ আমার প্রতিকূলে যে যে বচসা করে, তাহা আমি শুনিয়াছি। 28 তুমি তাহাদিগকে বল, সদাপ্রভু বলেন, আমি জীবন্ত, আমার কর্ণগোচরে তোমরা যাহা বলিয়াছ, তাহাই আমি তোমাদের প্রতি করিব; 29 এই প্রান্তরে তোমাদের শব পতিত হইবে; তোমাদের সম্পূর্ণ সংখ্যানুসারে গণিত বিংশতি বৎসর ও ততোধিক বয়স্ক তোমরা যে সমস্ত লোক আমার বিপরীতে বচসা করিয়াছ, 30 আমি তোমাদিগকে যে দেশে বাস করাইব বলিয়া হস্ত উত্তোলন করিয়াছিলাম, সেই দেশে তোমরা প্রবেশ করিবে না, কেবল যিফুন্নির পুত্র কালেব ও নূনের পুত্র যিহোশূয় প্রবেশ করিবে। 31 কিন্তু তোমরা আপনাদের যে বালকদের বিষয়ে বলিয়াছিলে, ইহারা লুন্ঠিত হইবে, তাহাদিগকে আমি তথায় প্রবেশ করাইব; ও তোমরা যে দেশ অগ্রাহ্য করিয়াছ, তাহারা তাহার পরিচয় পাইবে। 32 কিন্তু তোমাদের শব এই প্রান্তরে পতিত হইবে। 33 আর তোমাদের সন্তানগণ চল্লিশ বৎসর এই প্রান্তরে পশু চরাইবে, এবং এই প্রান্তরে তোমাদের শবের সংখ্যা যে পর্যন্ত সম্পূর্ণ না হয়, সেই পর্যন্ত তাহারা তোমাদের ব্যভিচারের ফল ভোগ করিবে। 34 তোমরা যে চল্লিশ দিন দেশ নিরীক্ষণ করিয়াছ, সেই দিনের সংখ্যানুসারে চল্লিশ বৎসর, এক এক দিনের জন্য এক এক বৎসর, তোমরা আপনাদের অপরাধ বহন করিবে, আর আমার বিপক্ষতা কেমন, তাহা জ্ঞাত হইবে। 35 আমি সদাপ্রভু বলিয়াছি, আমার বিপরীতে চক্রান্তকারী এই সমগ্র দুষ্ট মণ্ডলীর প্রতি আমি ইহা অবশ্য করিব; এই প্রান্তরে তাহারা নিঃশেষিত হইবে, এখানেই তাহারা মরিবে।
36 আর দেশ নিরীক্ষণ করিতে মোশি যে লোকদিগকে পাঠাইয়াছিলেন, যাহারা ফিরিয়া আসিয়া ঐ দেশের অখ্যাতি করিয়া তাঁহার প্রতিকূলে সমস্ত মণ্ডলীকে দিয়া বচসা করাইয়াছিল, 37 দেশের অখ্যাতিকারী সেই ব্যক্তিরা সদাপ্রভুর সম্মুখে মহামারীতে মরিল। 38 যে ব্যক্তিরা দেশ নিরীক্ষণ করিতে গিয়াছিল, তাহাদের মধ্যে কেবল নূনের পুত্র যিহোশূয় ও যিফূন্নির পুত্র কালেব জীবিত থাকিলেন। 39 তখন মোশি সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানকে সেই কথা কহিলেন, এবং লোকেরা অতিশয় শোক করিল।
40 পরে তাহারা প্রত্যুষে উঠিয়া পর্বতের শৃঙ্গে আরোহণ করিতে উদ্যত হইয়া কহিল, দেখ, এই আমরা, সদাপ্রভু যে স্থানের কথা বলিয়াছেন, আমরা সেই স্থানে যাই, কেননা আমরা পাপ করিয়াছি। 41 তাহাতে মোশি কহিলেন, এখন সদাপ্রভুর আজ্ঞা লঙ্ঘন কেন করিতেছ? ইহা ত সফল হইবে না। 42 তোমরা উঠিয়া যাইও না, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের মধ্যে নাই, গেলে তোমরা শত্রুসম্মুখে পরাস্ত হইবে। 43 কেননা অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা সেই স্থানে তোমাদের সম্মুখে আছে; তোমরা খড়্‌গে পতিত হইবে, কেননা তোমরা সদাপ্রভুর পশ্চাৎ হইতে ফিরিয়াছ, তাই সদাপ্রভু তোমাদের সহবর্তী হইবেন না। 44 তথাপি তাহারা দুঃসাহসী হইয়া পর্বত শৃঙ্গে আরোহণ করিতে লাগিল; কিন্তু সদাপ্রভুর সাক্ষ্য-সিন্দুক ও মোশি শিবির হইতে সরিলেন না। 45 তখন ঐ পর্বতবাসী অমালেকীয়েরা ও কনানীয়েরা নামিয়া আসিয়া তাহাদিগকে আঘাত করিল ও হর্মা পর্যন্ত তাহাদিগকে তাড়াইয়া দিল।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy