YouVersion Logo
Search Icon

যিহোশূয় ২২

২২
যর্দনের পূর্ব পারস্থ গোষ্ঠীদের স্বদেশ যাত্রা
1 তৎকালে যিহোশূয় রূবেণীয় ও গাদীয়দিগকে এবং মনঃশির অর্ধ বংশকে ডাকিয়া কহিলেন; 2 সদাপ্রভুর দাস মোশি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা দিয়াছিলেন, সেই সমস্তই তোমরা পালন করিয়াছ; এবং আমি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা দিয়াছি, তাহাতে আমার কথায়ও কর্ণপাত করিয়াছ। 3 বহুদিন হইতে অদ্য পর্যন্ত তোমরা আপন আপন ভ্রাতৃগণকে ছাড়িয়া যাও নাই, কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করিয়া আসিয়াছ। 4 সমপ্রতি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপন প্রতিজ্ঞানুসারে তোমাদের ভ্রাতৃগণকে বিশ্রাম দিয়াছেন; অতএব এখন তোমরা আপন আপন তাম্বুতে, অর্থাৎ সদাপ্রভুর দাস মোশি যর্দনের পরপারে যে দেশ তোমাদিগকে দিয়াছেন, আপনাদের সেই অধিকার-দেশে ফিরিয়া যাও। 5 কেবল এই এই বিষয়ে খুব যত্নবান থাকিও, সদাপ্রভুর দাস মোশি তোমাদিগকে যে আজ্ঞা ও ব্যবস্থা দিয়াছেন, তাহা পালন করিও, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করিও, তাঁহার সমস্ত পথে চলিও, তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন করিও, তাঁহাতে আসক্ত থাকিও, এবং সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সহিত তাঁহার সেবা করিও। 6 পরে যিহোশূয় তাহাদিগকে আশীর্বাদ করিয়া বিদায় করিলেন; তাহারা আপন আপন তাম্বুতে প্রস্থান করিল। 7 মোশি মনঃশির অর্ধ বংশকে বাশনে অধিকার দিয়াছিলেন, এবং যিহোশূয় তাহার অন্য অর্ধ বংশকে যর্দনের পশ্চিম পারে তাহাদের ভ্রাতৃগণের মধ্যে অধিকার দিয়াছিলেন। আর আপন আপন তাম্বুতে বিদায় করিবার সময়ে যিহোশূয় তাহাদিগকে আশীর্বাদ করিলেন, আর কহিলেন, 8 তোমরা প্রচুর সমপত্তি, পাল পাল পশু এবং রৌপ্য, স্বর্ণ, পিত্তল, লৌহ ও অনেক বস্ত্র সঙ্গে লইয়া আপন আপন তাম্বুতে ফিরিয়া যাও, তোমাদের শত্রুগণ হইতে লুন্ঠিত দ্রব্য তোমাদের ভ্রাতাদের সহিত বিভাগ করিয়া লও।
9 পরে রূবেণ-সন্তানগণ, গাদ-সন্তানগণ ও মনঃশির অর্ধ বংশ কনান দেশস্থ শীলোতে ইস্রায়েল-সন্তানগণের নিকট হইতে ফিরিয়া গেল, মোশি দ্বারা কথিত সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে প্রাপ্ত গিলিয়দ দেশের, তাহাদের অধিকার-দেশের দিকে যাইবার জন্য যাত্রা করিল। 10 আর কনান দেশস্থ যর্দন অঞ্চলে উপস্থিত হইলে রূবেণ-সন্তানগণ, গাদ-সন্তানগণ ও মনঃশির অর্ধ বংশ সেই স্থানে যর্দনের ধারে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিল, সেই বেদি দেখিতে বৃহৎ।
11 তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণ শুনিতে পাইল, দেখ, রূবেণ-সন্তানগণ, গাদ-সন্তানগণ ও মনঃশির অর্ধ বংশ কনান দেশের সম্মুখে যর্দন অঞ্চলে, ইস্রায়েল-সন্তানগণের পারে, এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিয়াছে। 12 ইস্রায়েল-সন্তানগণ যখন এই কথা শুনিল, তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলী তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গমন করিতে শীলোতে একত্র হইল। 13 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ রূবেণ-সন্তানগণের, গাদ-সন্তানগণের ও মনঃশির অর্ধ বংশের নিকটে গিলিয়দ দেশে ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহস্‌কে, 14 এবং তাঁহার সঙ্গে দশ জন অধ্যক্ষকে, ইস্রায়েলের প্রত্যেক বংশ হইতে এক একজন পিতৃকুলাধ্যক্ষকে, প্রেরণ করিল; তাঁহারা এক একজন ইস্রায়েলের সহস্রগণের মধ্যে আপন আপন পিতৃকুলের পতি ছিলেন। 15 তাঁহারা গিলিয়দ দেশে রূবেণ-সন্তানগণের, গাদ-সন্তানগণের ও মনঃশির অর্ধ বংশের নিকটে আসিয়া তাহাদিগকে এই কথা কহিলেন, 16 সদাপ্রভুর সমস্ত মণ্ডলী এই কথা বলিতেছে, অদ্য সদাপ্রভুর বিপরীতে বিদ্রোহী হইবার জন্য আপনাদের নিমিত্তে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করাতে তোমরা অদ্য সদাপ্রভুর অনুগমন হইতে ফিরিবার জন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এই যে সত্যলঙ্ঘন করিলে, এ কি? 17 যে অপরাধ প্রযুক্ত সদাপ্রভুর মণ্ডলীর মধ্যে মহামারী হইয়াছিল, এবং যাহা হইতে আমরা অদ্যাপি শুচিকৃত হই নাই, পিয়োর-বিষয়ক সেই অপরাধ কি আমাদের পক্ষে ক্ষুদ্র? 18 এই কারণ কি অদ্য সদাপ্রভুর পশ্চাদ্‌গমন হইতে ফিরিয়া যাইতে চাহ? তোমরা অদ্য সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হইলে তিনি কল্য ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীর প্রতি ক্রুদ্ধ হইবেন। 19 যাহা হউক, তোমাদের অধিকার-দেশ যদি অশুচি হয়, তবে পার হইয়া সদাপ্রভুর অধিকার দেশে, যেখানে সদাপ্রভুর আবাস রহিয়াছে, সেখানে আসিয়া আমাদেরই মধ্যে অধিকার গ্রহণ কর; কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদি ভিন্ন আপনাদের জন্য অন্য যজ্ঞবেদি নির্মাণ দ্বারা সদাপ্রভুর বিদ্রোহী ও আমাদের বিদ্রোহী হইও না। 20 সেরহের পুত্র আখন বর্জিত বস্তু সম্বন্ধে সত্যলঙ্ঘন করিলে ঈশ্বরের ক্রোধ কি ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীর প্রতি উপস্থিত হইল না? সেই ব্যক্তি ত আপন অপরাধে একাকী বিনষ্ট হয় নাই।
21 তখন রূবেণ-সন্তানগণ, গাদ-সন্তানগণ ও মনঃশির অর্ধ বংশ ইস্রায়েলের সেই সহস্রপতিদিগকে এই উত্তর দিল; 22 ঈশ্বরদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, ঈশ্বরদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তিনিই জানেন, এবং ইস্রায়েল, সেও জানিবে; যদি আমরা সদাপ্রভুর বিপরীতে বিদ্রোহ-ভাবে কিম্বা সত্য-লঙ্ঘনের ভাবে ইহা করিয়া থাকি, তবে অদ্য আমাদিগকে রক্ষা করিও না। 23 আমরা আপনাদের জন্য যে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিয়াছি, তাহা যদি সদাপ্রভুর পশ্চাদ্‌গমন হইতে ফিরিয়া যাইবার জন্য, কিম্বা তাহার উপরে হোম বা ভক্ষ্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ করণার্থে অথবা মঙ্গলার্থক বলিদান উৎসর্গ করণার্থে নির্মাণ করিয়া থাকি, তবে সদাপ্রভু স্বয়ং তাহার প্রতিফল দিউন। 24 আমরা বরং ভয় করিয়া, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ইহা করিয়াছি, ফলতঃ কি জানি, ভাবী কালে তোমাদের সন্তানগণ আমাদের সন্তানগণকে এই কথা কহিবে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সহিত তোমাদের সমপর্ক কি? 25 হে রূবেণ-সন্তানগণ, গাদ-সন্তানগণ, তোমাদের ও আমাদের উভয়ের মধ্যে সদাপ্রভু যর্দনকে সীমা করিয়া রাখিয়াছেন; সদাপ্রভুতে তোমাদের কোন অধিকার নাই। এইরূপে পাছে তোমাদের সন্তানগণ আমাদের সন্তানগণকে সদাপ্রভুর ভয় ত্যাগ করায়। 26 এই জন্য আমরা কহিলাম, আইস, আমরা এক বেদি নির্মাণের উদ্‌যোগ করি, হোমের বা বলিদানের জন্য নয়; 27 কিন্তু আমাদের হোম, আমাদের বলি ও আমাদের মঙ্গলার্থক উপহার দ্বারা সদাপ্রভুর সম্মুখে তাঁহার সেবা করিতে আমাদের অধিকার আছে, ইহার প্রমাণার্থে তাহা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এবং আমাদের পরে আমাদের ভাবী বংশের মধ্যে সাক্ষী হইবে; তাহাতে ভাবী কালে তোমাদের সন্তানগণ আমাদের সন্তানগণকে বলিতে পারিবে না যে, সদাপ্রভুতে তোমাদের কোন অংশ নাই। 28 আর আমরা কহিলাম, তাহারা যদি ভাবী কালে আমাদিগকে কিম্বা আমাদের বংশকে এই কথা বলে, তবে আমরা বলিব, তোমরা সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির ঐ প্রতিরূপ দেখ, আমাদের পিতৃপুরুষগণ উহা নির্মাণ করিয়াছে; হোমের বা বলিদানের জন্য নয়, কিন্তু উহা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। 29 আমরা যে হোমের, ভক্ষ্য-নৈবেদ্যের কিম্বা বলিদানের নিমিত্তে আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আবাসের সম্মুখস্থিত তাঁহার যজ্ঞবেদি ব্যতীত অন্য যজ্ঞবেদি নির্মাণ দ্বারা সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হইব, কিম্বা আমরা যে সদাপ্রভুর পশ্চাদ্‌গমন হইতে অদ্য ফিরিয়া যাইব, তাহা দূরে থাকুক।
30 তখন পীনহস যাজক, তাঁহার সহবর্তী মণ্ডলীর অধ্যক্ষগণ ও ইস্রায়েলের সহস্রপতিগণ রূবেণ-সন্তানগণের, গাদ-সন্তানগণের ও মনঃশি-সন্তানগণের এই কথা শুনিয়া সন্তুষ্ট হইলেন। 31 আর ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহস রূবেণ-সন্তানগণকে, গাদ-সন্তানগণকে ও মনঃশি-সন্তানগণকে কহিলেন, অদ্য আমরা জানিলাম যে, সদাপ্রভু আমাদের মধ্যে আছেন, কেননা তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে এই সত্য লঙ্ঘন কর নাই; এখন তোমরা ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সদাপ্রভুর হস্ত হইতে উদ্ধার করিলে।
32 পরে ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহস ও অধ্যক্ষগণ রূবেণ-সন্তানগণের ও গাদ-সন্তানগণের নিকট হইতে, গিলিয়দ দেশ হইতে, কনান দেশে ইস্রায়েল-সন্তানগণের কাছে ফিরিয়া আসিয়া তাহাদিগকে সংবাদ দিলেন। 33 তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণ ঐ বিষয়ে সন্তুষ্ট হইল; আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিল, এবং রূবেণ-সন্তানগণের ও গাদ-সন্তানগণের নিবাসদেশ বিনাশ করিবার জন্য যুদ্ধে যাইবার সম্বন্ধে আর কিছু কহিল না। 34 পরে রূবেণ-সন্তানগণ ও গাদ-সন্তানগণ সেই বেদির নাম [এদ] রাখিল, কেননা [তাহারা কহিল], সদাপ্রভুই যে ঈশ্বর, ইহা আমাদের মধ্যে তাহার সাক্ষী [এদ] হইবে।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy