YouVersion Logo
Search Icon

বিচারকর্তৃগণ ২০

২০
1 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ সকলে বাহির হইল, দান অবধি বের্‌-শেবা পর্যন্ত ও গিলিয়দ দেশ সমেত সমস্ত মণ্ডলী এক মনুষ্যের ন্যায় মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে সমবেত হইল। 2 ঈশ্বরের প্রজাদের সেই সমাজে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সমস্ত জনসমাজের অধ্যক্ষ ও চারি লক্ষ খড়্‌গধারী পদাতিক উপস্থিত হইল। 3 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ মিস্‌পাতে উঠিয়া গিয়াছে, এই কথা বিন্যামীন-সন্তানগণ শুনিতে পাইল। পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ কহিল, বল দেখি, এই দুষ্কর্ম কি প্রকারে হইল? 4 সেই লেবীয়, নিহত স্ত্রীর স্বামী উত্তর করিয়া কহিল, আমি ও আমার উপপত্নী রাত্রি যাপন করিবার জন্য বিন্যামীনের অধিকারস্থ গিবিয়াতে প্রবেশ করিয়াছিলাম। 5 আর গিবিয়ার গৃহস্থেরা আমার বিরুদ্ধে উঠিয়া রাত্রিকালে আমার জন্য গৃহের চারিদিক বেষ্টন করিল। তাহারা আমাকে বধ করিবার কল্পনা করিয়াছিল, আর আমার উপপত্নীকে বলাৎকার করায় সে মরিয়া গেল। 6 পরে আমি নিজ উপপত্নীকে লইয়া খণ্ড খণ্ড করিয়া ইস্রায়েলের অধিকারস্থ প্রদেশের সর্বত্র পাঠাইলাম, কেননা তাহারা ইস্রায়েলের মধ্যে কুকর্ম ও মূঢ়তার কার্য করিয়াছে। 7 দেখ, তোমরা সকলেই ইস্রায়েল-সন্তান; অতএব এই বিষয়ে আপন আপন মত বলিয়া মন্ত্রণা স্থির কর।
8 তখন সকল লোক এক মনুষ্যের ন্যায় উঠিয়া কহিল, আমরা কেহ আপন তাম্বুতে যাইব না, কেহ আপন বাটীতে ফিরিয়া যাইব না; 9 কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি এই কার্য করিব, আমরা গুলিবাঁটপূর্বক তাহার বিরুদ্ধে যাইব। 10 আর আমরা লোকদের জন্য খাদ্য দ্রব্য আনিতে ইস্রায়েল-বংশসমূহের মধ্যে একশত লোকের প্রতি দশ, এক সহস্রের প্রতি একশত ও দশ সহস্রের প্রতি এক সহস্র লোক সংগ্রহ করিব, যেন আমরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গিয়া ইস্রায়েলের মধ্যে কৃত সমস্ত মূঢ়তার কর্ম অনুসারে প্রতিফল দিতে পারি। 11 এইরূপে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক মনুষ্যের ন্যায় এক যোগ হইয়া ঐ নগরের প্রতিকূলে একত্র হইল।
12 পরে ইস্রায়েলের বংশসমূহ বিন্যামীন বংশের সর্বত্র লোক প্রেরণ করিয়া কহিল, তোমাদের মধ্যে এ কি দুষ্কর্ম হইয়াছে? 13 তোমরা এখন ঐ লোকদিগকে, গিবিয়া-নিবাসী পাষণ্ডদিগকে, সমর্পণ কর, আমরা তাহাদিগকে বধ করিয়া ইস্রায়েল হইতে দুষ্টাচার লোপ করিব, কিন্তু বিন্যামীন আপন ভ্রাতাদের অর্থাৎ ইস্রায়েল-সন্তানগণের কথা শুনিতে সম্মত হইল না। 14 বরং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সহিত যুদ্ধ করণার্থে বিন্যামীন-সন্তানগণ নানা নগর হইতে গিবিয়াতে গিয়া একত্র হইল। 15 সেই দিন নানা নগর হইতে আগত বিন্যামীন-সন্তানদের ছাব্বিশ সহস্র খড়্‌গধারী লোক গণিত হইল; ইহারা গিবিয়া-নিবাসিগণ হইতে ভিন্ন; তাহারাও সাত শত মনোনীত লোক গণিত হইল। 16 আবার এই সকল লোকের মধ্যে সাত শত মনোনীত লোক নেটা ছিল; তাহাদের প্রত্যেক জন কেশ লক্ষ্যে ফিঙ্গার পাথর মারিতে পারিত, লক্ষ্যচ্যুত হইত না।
17 বিন্যামীন ভিন্ন ইস্রায়েলের খড়্‌গধারী চারি লক্ষ লোক গণিত হইল; ইহারা সকলেই যোদ্ধা ছিল। 18 ইস্রায়েল-সন্তানগণ উঠিয়া বৈথেলে গিয়া ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করিল; তাহারা কহিল, বিন্যামীন-সন্তানগণের সহিত যুদ্ধ করিতে আমাদের মধ্যে প্রথমে কে যাইবে? সদাপ্রভু কহিলেন, প্রথমে যিহূদা যাইবে। 19 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ প্রাতঃকালে উঠিয়া গিবিয়ার সম্মুখে শিবির স্থাপন করিল। 20 পরে ইস্রায়েল-লোকেরা বিন্যামীনের সহিত যুদ্ধ করিতে বাহির হইয়া গেল; তাহাদের সহিত যুদ্ধ করিতে ইস্রায়েল-লোকেরা গিবিয়ার সমীপে সৈন্য রচনা করিল। 21 তখন বিন্যামীন-সন্তানগণ গিবিয়া হইতে বাহির হইয়া ঐ দিবসে ইস্রায়েলের মধ্যে বাইশ সহস্র লোককে সংহার করিয়া ভূতলশায়ী করিল।
22 পরে ইস্রায়েল-লোকেরা আপনাদিগকে আশ্বাস দিয়া, প্রথম দিবসে যে স্থানে সৈন্য রচনা করিয়াছিল, পুনর্বার সেই স্থানে সৈন্য রচনা করিল। 23 আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ উঠিয়া গিয়া সন্ধ্যাকাল পর্যন্ত সদাপ্রভুর সাক্ষাতে রোদন করিল, এবং সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করিল, আমরা আপন ভ্রাতা বিন্যামীন-সন্তানদের সহিত যুদ্ধ করিতে কি পুনর্বার যাইব? সদাপ্রভু কহিলেন, তাহার বিরুদ্ধে যাও। 24 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ দ্বিতীয় দিবসে বিন্যামীন-সন্তানগণের প্রতিকূলে উপস্থিত হইল। 25 আর বিন্যামীন সেই দ্বিতীয় দিবসে তাহাদের বিরুদ্ধে গিবিয়া হইতে নির্গত হইয়া পুনর্বার ইস্রায়েল-সন্তানগণের মধ্যে আঠার সহস্র লোককে সংহার করিয়া ভূতলশায়ী করিল, ইহারা সকলেই খড়্‌গধারী ছিল।
26 পরে সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তান, সমস্ত লোক, গিয়া বৈথেলে উপস্থিত হইল, এবং সেই স্থানে সদাপ্রভুর সম্মুখে রোদন করিল ও বসিয়া রহিল, এবং সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করিয়া সদাপ্রভুর সম্মুখে হোম ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করিল। 27 সেই সময়ে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুক ঐ স্থানে ছিল, এবং হারোণের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস তৎসম্মুখে দণ্ডায়মান ছিলেন; 28 অতএব ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুকে এই কথা জিজ্ঞাসা করিল, আমরা আপন ভ্রাতা বিন্যামীন-সন্তানগণের সহিত যুদ্ধ করিতে এখনও কি পুনর্বার যাইব? না ক্ষান্ত হইব? সদাপ্রভু কহিলেন, যাও, কেননা কল্য আমি তোমাদের হস্তে তাহাদিগকে সমর্পণ করিব। 29 পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারিদিকে ঘাঁটি বসাইল।
30 পরে তৃতীয় দিবসে ইস্রায়েল-সন্তানগণ বিন্যামীন-সন্তানগণের বিরুদ্ধে উঠিয়া গিয়া অন্যান্য সময়ের ন্যায় গিবিয়ার নিকটে সৈন্য রচনা করিল। 31 তখন বিন্যামীন-সন্তানগণ ঐ লোকদের বিরুদ্ধে বাহির হইল, এবং নগর হইতে দূরে আকর্ষিত হইয়া প্রথম বারের ন্যায় লোকদিগকে আঘাত ও বধ করিতে লাগিল, বিশেষতঃ বৈথেলে যাইবার ও ক্ষেত্রস্থ গিবিয়াতে যাইবার দুই রাজপথে তাহারা ইস্রায়েলের মধ্যে অনুমান ত্রিশ জনকে বধ করিল। 32 তাহাতে বিন্যামীন-সন্তানগণ কহিল, উহারা আমাদের সম্মুখে পূর্বের ন্যায় পরাজিত হইতেছে, কিন্তু ইস্রায়েল-সন্তানগণ বলিয়াছিল, আইস, আমরা পলাইয়া উহাদিগকে নগর হইতে রাজপথে আকর্ষণ করি। 33 অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত লোক আপন আপন স্থান হইতে উঠিয়া গিয়া বাল্‌-তামরে সৈন্য রচনা করিল; ইতিমধ্যে ইস্রায়েলের লুক্কায়িত লোকেরা আপনাদের স্থান হইতে অর্থাৎ মারে-গেবা হইতে নির্গত হইল। 34 পরে সমস্ত ইস্রায়েল হইতে দশ সহস্র মনোনীত লোক গিবিয়ার সম্মুখে আসিল, তাহাতে ঘোরতর সংগ্রাম হইল; কিন্তু উহারা জানিত না যে, অমঙ্গল উহাদের নিকটবর্তী। 35 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সম্মুখে বিন্যামীনকে আঘাত করিলেন, আর সেই দিন ইস্রায়েল-সন্তানগণ বিন্যামীনের পঁচিশ সহস্র একশত লোককে সংহার করিল, ইহারা সকলেই খড়্‌গধারী ছিল।
36 এইরূপে বিন্যামীন-সন্তানগণ দেখিল যে, তাহারা আহত হইয়াছে; কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা বিন্যামীনের নিকট হইতে পলায়ন করিয়াছিল, যেহেতু তাহারা যাহাদিগকে গিবিয়ার বিরুদ্ধে স্থাপন করিয়াছিল, সেই লুক্কায়িত লোকদের উপরে নির্ভর করিতেছিল। 37 ইতিমধ্যে ঐ লুক্কায়িত লোকেরা সত্বর গিবিয়া আক্রমণ করিল, আর প্রবেশ করিয়া খড়্‌গধারে সমস্ত লোককে আঘাত করিল। 38 ইস্রায়েল-লোকদের ও লুক্কায়িত লোকদের মধ্যে এই চিহ্ন স্থির করা হইয়াছিল যে, লুক্কায়িত লোকেরা নগর হইতে ধূমের মেঘ উঠাইবে। 39 অতএব ইস্রায়েল-লোকেরা সংগ্রাম করিতে করিতে মুখ ফিরাইল। তখন বিন্যামীন তাহাদের অনুমান ত্রিশ জনকে আঘাত ও বধ করিয়াছিল, কেননা তাহারা বলিয়াছিল, প্রথম যুদ্ধের ন্যায় এবারেও উহারা আমাদের সম্মুখে আহত হইল। 40 কিন্তু যখন নগর হইতে স্তম্ভাকারে ধূমময় মেঘ উঠিতে লাগিল, তখন বিন্যামীন পশ্চাতে চাহিয়া দেখিল, আর দেখ, সমস্ত নগর ধূমময় হইয়া আকাশে উড়িয়া যাইতেছে। 41 আর ইস্রায়েল-লোকেরাও মুখ ফিরাইল; তাহাতে অমঙ্গল তাহাদের উপরে আসিয়া পড়িল দেখিয়া বিন্যামীনের লোকেরা বিহ্বল হইল। 42 অতএব তাহারা ইস্রায়েল-লোকদের সম্মুখে প্রান্তরের পথের দিকে ফিরিল; কিন্তু সেই স্থানেও যুদ্ধ তাহাদের অনুবর্তী হইল; এবং নগর সকল হইতে আগত লোকেরা তথায় তাহাদিগকে সংহার করিল। 43 তাহারা চারিদিকে বিন্যামীনকে ঘেরিয়া তাড়াইতে লাগিল, এবং সূর্যোদয়-দিকে গিবিয়ার সম্মুখস্থ স্থান পর্যন্ত তাহাদের বিশ্রামস্থানে তাহাদিগকে দলিত করিতে লাগিল। 44 তাহাতে বিন্যামীনের আঠার সহস্র লোক হত হইল, তাহারা সকলেই যোদ্ধা ছিল। 45 পরে অবশিষ্ট লোকেরা প্রান্তরের দিকে ফিরিয়া রিম্মোণ শৈলে পলায়ন করিতে লাগিল, আর উহারা রাজপথে তাহাদের অন্য পাঁচ সহস্র লোককে বধ করিল; পরে বেগে তাহাদের পশ্চাতে পশ্চাতে তাড়া করিয়া গিদোম পর্যন্ত গিয়া তাহাদের দুই সহস্র লোককে আঘাত করিল। 46 অতএব সেই দিন বিন্যামীনের মধ্যে খড়্‌গধারী পঁচিশ সহস্র লোক হত হইল; তাহারা সকলেই বলবান লোক ছিল। 47 কিন্তু ছয়শত লোক প্রান্তরের দিকে ফিরিয়া রিম্মোণ শৈলে পলায়ন করিয়া সেই রিম্মোণ শৈলে চারি মাস বাস করিল। 48 পরে ইস্রায়েল-লোকেরা বিন্যামীন-সন্তানগণের প্রতিকূলে ফিরিয়া নগরস্থ মনুষ্য ও পশু প্রভৃতি যাহা যাহা পাওয়া গেল, সেই সকলকে খড়্‌গধারে আঘাত করিল; তাহারা যত নগর পাইল, সেই সকল আগুনে পোড়াইয়া দিল।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy