বিচারকর্তৃগণ ১৩
১৩
শিম্শোনের জন্মের বিবরণ
1 পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ, তাহাই পুনর্বার করিল; তাহাতে সদাপ্রভু চল্লিশ বৎসর তাহাদিগকে পলেষ্টীয়দের হস্তে সমর্পণ করিলেন।
2 তৎকালে দানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সরা-নিবাসী মানোহ নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁহার স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে সন্তান হয় নাই। 3 পরে সদাপ্রভুর দূত সেই স্ত্রীকে দর্শন দিয়া কহিলেন, দেখ, তুমি বন্ধ্যা, তোমার সন্তান হয় না, কিন্তু গর্ভধারণ করিয়া পুত্র প্রসব করিবে। 4 অতএব সাবধান, দ্রাক্ষারস কি সুরা পান করিও না, এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন করিও না। 5 কারণ দেখ, তুমি গর্ভধারণ করিয়া পুত্র প্রসব করিবে; আর তাহার মস্তকে ক্ষুর উঠিবে না, কেননা সেই বালক গর্ভ হইতেই ঈশ্বরের উদ্দেশে নাসরীয় হইবে, এবং সে পলেষ্টীয়দের হস্ত হইতে ইস্রায়েলকে নিস্তার করিতে আরম্ভ করিবে। 6 তখন সেই স্ত্রী আসিয়া আপন স্বামীকে কহিলেন, ঈশ্বরের একজন লোক আমার কাছে আসিয়াছিলেন, তাঁহার রূপ ঈশ্বরীয় দূতের রূপের ন্যায়, অতি ভয়ঙ্কর; তিনি কোথা হইতে আসিলেন, তাহা আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করি নাই, আর তিনিও আমাকে তাঁহার নাম বলেন নাই। 7 কিন্তু তিনি আমাকে কহিলেন, দেখ, তুমি গর্ভধারণ করিয়া পুত্র প্রসব করিবে; এখন দ্রাক্ষারস কিম্বা সুরা পান করিও না, এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন করিও না, কেননা, সেই বালক গর্ভ হইতে মরণ দিন পর্যন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশে নাসরীয় হইবে।
8 তখন মানোহ সদাপ্রভুর কাছে বিনতি করিয়া কহিলেন, হে প্রভু, ঈশ্বরের যে লোককে আপনি আমাদের কাছে পাঠাইয়াছিলেন, তাঁহাকে পুনর্বার আমাদের কাছে আসিতে দিউন, এবং যে বালকটি জন্মিবে, তাহার প্রতি আমাদের কি কর্তব্য, তাহা আমাদিগকে বুঝাইয়া দিউন। 9 তখন ঈশ্বর মানোহের রবে কর্ণপাত করিলেন; ঈশ্বরের সেই দূত পুনর্বার সেই স্ত্রীর কাছে আসিলেন; সেই সময়ে তিনি ক্ষেত্রে বসিয়াছিলেন; তখন তাঁহার স্বামী মানোহ তাঁহার সঙ্গে ছিলেন না। 10 সেই স্ত্রী শীঘ্র দৌড়াইয়া গিয়া আপন স্বামীকে সংবাদ দিলেন, তাঁহাকে কহিলেন, দেখ, সেই দিন যে লোকটি আমার কাছে আসিয়াছিলেন, তিনি আমাকে দর্শন দিয়াছেন। 11 মানোহ উঠিয়া আপন স্ত্রীর পশ্চাতে পশ্চাতে গেলেন, এবং সেই ব্যক্তির কাছে গিয়া তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, এই স্ত্রীর সঙ্গে যিনি কথা বলিয়াছিলেন, আপনি কি সেই ব্যক্তি? তিনি কহিলেন, আমিই সেই। 12 মানোহ কহিলেন, এখন আপনার বাক্য সফল হউক; সেই বালকের প্রতি কি বিধি ও কি কর্তব্য? 13 সদাপ্রভুর দূত মানোহকে কহিলেন, আমি ঐ স্ত্রীকে যে সমস্ত কথা বলিয়াছি সেই সকল বিষয়ে সে সাবধান থাকুক। 14 সে দ্রাক্ষালতাজাত কোন বস্তু ভোজন করিবে না, দ্রাক্ষারস কি সুরা পান করিবে না, এবং কোন অশুচি দ্রব্য ভোজন করিবে না; আমি তাহাকে যাহা কিছু আজ্ঞা করিয়াছি, সে তাহা পালন করুক।
15 পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে কহিলেন, বিনয় করি, কিঞ্চিৎ বিলম্ব করুন, আমরা আপনার জন্য একটি ছাগবৎস প্রস্তুত করি। 16 সদাপ্রভুর দূত মানোহকে কহিলেন, তুমি আমাকে বিলম্ব করাইলেও আমি তোমার খাদ্য দ্রব্য ভোজন করিব না; আর তুমি যদি হোমবলি উৎসর্গ কর, তবে সদাপ্রভুরই উদ্দেশে তাহা কর। বস্তুতঃ তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, তাহা মানোহ জানিতে পারেন নাই। 17 পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে কহিলেন, আপনার নাম কি? আপনার বাক্য সফল হইলে আমরা আপনার গৌরব করিব। 18 সদাপ্রভুর দূত কহিলেন, কেন আমার নাম জিজ্ঞাসা করিতেছ? তাহা ত আশ্চর্য। 19 পরে মানোহ ঐ ছাগবৎস ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে শৈলের উপরে উৎসর্গ করিলেন। তাহাতে ঐ দূত, আশ্চর্য ব্যাপার সাধন করিলেন, মানোহ ও তাঁহার স্ত্রী তাহা দেখিতেছিলেন। 20 যখন অগ্নিশিখা বেদি হইতে আকাশের দিকে উঠিল, তখন সদাপ্রভুর দূত ঐ বেদির শিখাতে উঠিলেন; আর মানোহ ও তাঁহার স্ত্রী দৃষ্টিপাত করিলেন; এবং তাঁহারা ভূমিতে উবুড় হইয়া পড়িলেন। 21 তৎপরে সদাপ্রভুর দূত মানোহকে ও তাঁহার স্ত্রীকে আর দর্শন দিলেন না; তখন তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, ইহা মানোহ জানিতে পারিলেন। 22 পরে মানোহ আপন স্ত্রীকে কহিলেন আমরা অবশ্য মারা পড়িব, কারণ ঈশ্বরকে দেখিয়াছি। 23 কিন্তু তাঁহার স্ত্রী কহিলেন, আমাদিগকে বধ করা যদি সদাপ্রভুর অভিরুচি হইত, তবে তিনি আমাদের হস্ত হইতে হোম ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য গ্রহণ করিতেন না, এবং এই সকল আমাদিগকে দেখাইতেন না, আর এই সময় আমাদিগকে এমন সকল কথাও শুনাইতেন না। 24 পরে ঐ স্ত্রী পুত্র প্রসব করিয়া তাঁহার নাম শিম্শোন রাখিলেন। আর বালকটি বাড়িয়া উঠিলেন, ও সদাপ্রভু তাঁহাকে আশীর্বাদ করিলেন। 25 আর সদাপ্রভুর আত্মা প্রথমে সরার ও ইষ্টায়োলের মধ্যস্থানে, মহনেদানে, তাঁহাকে চালাইতে লাগিলেন।
Currently Selected:
বিচারকর্তৃগণ ১৩: বিবিএস
Highlight
Share
Copy
Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.