YouVersion Logo
Search Icon

যাত্রাপুস্তক ১০

১০
অষ্টম ও নবম আঘাত
1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি ফরৌণের নিকটে যাও; কেননা আমি তাহার ও তাহার দাসগণের হৃদয় কঠিন করিলাম, যেন আমি তাহাদের মধ্যে আমার এই সকল চিহ্ন প্রদর্শন করি, 2 এবং আমি মিসরীয়দের প্রতি যাহা যাহা করিয়াছি, ও তাহাদের মধ্যে আমার যে যে চিহ্ন-কার্য করিয়াছি, তাহার বৃত্তান্ত যেন তুমি আপন পুত্রের ও পৌত্রের কর্ণগোচরে বল, এবং আমি যে সদাপ্রভু, ইহা তোমরা জ্ঞাত হও। 3 তখন মোশি ও হারোণ ফরৌণের নিকটে গিয়া কহিলেন, সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, তুমি আমার সম্মুখে নম্র হইতে কত কাল অসম্মত থাকিবে? আমার সেবা করণার্থে আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া দেও। 4 কিন্তু যদি আমার প্রজাদিগকে ছাড়িয়া দিতে অসম্মত হও, তবে দেখ, আমি কল্য তোমার সীমাতে পঙ্গপাল আনিব, 5 তাহারা ভূতল এমন আচ্ছন্ন করিবে যে, কেহ ভূমি দেখিতে পাইবে না; আর শিলাবৃষ্টি হইতে রক্ষিত ও অবশিষ্ট তোমাদের যাহা কিছু আছে, তাহা তাহারা খাইয়া ফেলিবে, এবং ক্ষেত্রোৎপন্ন তোমাদের বৃক্ষ সকলও খাইবে। 6 আর তোমার গৃহ ও তোমার সমস্ত দাসের গৃহ ও সমস্ত মিসরীয় লোকের গৃহ সকল পরিপূর্ণ হইবে; পৃথিবীতে তোমার পিতৃপুরুষদের ও তাহাদের পিতৃপুরুষদের জন্মাবধি অদ্য পর্যন্ত কখনও তদ্রূপ দেখা যায় নাই। তখন তিনি মুখ ফিরাইয়া ফরৌণের নিকট হইতে বাহিরে গেলেন।
7 তখন ফরৌণের দাসগণ তাঁহাকে কহিল, এই ব্যক্তি কত কাল আমাদের ফাঁদ হইয়া থাকিবে? এই লোকদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করণার্থে ইহাদিগকে ছাড়িয়া দিউন; আপনি কি এখনও বুঝিতেছেন না যে, মিসর দেশ ছারখার হইল? 8 তখন মোশি ও হারোণ ফরৌণের নিকটে পুনর্বার আনীত হইলেন; আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, যাও, তোমরা গিয়া তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর; কিন্তু কে কে যাইবে? 9 মোশি কহিলেন, আমরা আমাদের শিশু ও বৃদ্ধদিগকে, আমাদের পুত্রকন্যাগণকে এবং গোমেষাদির পালও সঙ্গে লইয়া যাইব, কেননা সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমাদের উৎসব করিতে হইবে। 10 তখন ফরৌণ তাঁহাদিগকে কহিলেন, সদাপ্রভু তোমাদের সেইরূপ সহবর্তী হউন, যেরূপ আমি তোমাদিগকে ও তোমাদের শিশুগণকে ছাড়িয়া দিব; দেখ, অনিষ্ট তোমাদের সম্মুখে। 11 তাহা হইবে না; তোমাদের পুরুষেরা গিয়া সদাপ্রভুর সেবা করুক; কারণ তোমরা ত ইহাই চাহিতেছ। পরে তাঁহারা ফরৌণের সম্মুখ হইতে দূরীকৃত হইলেন।
12 পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি মিসর দেশের উপরে পঙ্গপালের জন্য হস্ত বিস্তার কর, তাহাতে তাহারা মিসর দেশে আসিয়া ভূমির সমস্ত ওষধি খাইবে, শিলাবৃষ্টি যাহা কিছু রাখিয়া গিয়াছে, সকলই খাইবে। 13 তখন মোশি মিসর দেশের উপরে আপন যষ্টি বিস্তার করিলেন, তাহাতে সদাপ্রভু সমস্ত দিন ও সমস্ত রাত্রি দেশে পূর্বীয় বায়ু বহাইলেন, আর প্রাতঃকাল হইলে পূর্বীয় বায়ু পঙ্গপাল উঠাইয়া আনিল। 14 তাহাতে সমস্ত মিসর দেশের উপরে পঙ্গপাল ব্যাপ্ত হইল, ও মিসরের সমস্ত সীমাতে পঙ্গপাল ছড়াইয়া পড়িল। তাহা অত্যন্ত ভয়ানক হইল; তদ্রূপ পঙ্গপাল পূর্বে কখনও হয় নাই, এবং পরেও কখনও হইবে না। 15 তাহারা সমস্ত ভূমিতল আচ্ছন্ন করিল, তাহাতে দেশ অন্ধকার হইল, এবং ভূমির যে ওষধি ও বৃক্ষাদির যে ফল শিলাবৃষ্টি হইতে রক্ষা পাইয়াছিল, সেই সমস্ত তাহারা খাইয়া ফেলিল; সমস্ত মিসর দেশে বৃক্ষ বা ক্ষেত্রের ওষধি, হরিদ্বর্ণ কিছুই রহিল না।
16 তখন ফরৌণ সত্বর মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে ও তোমাদের বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছি। 17 বিনয় করি, কেবল এইবার আমার পাপ ক্ষমা কর, এবং আমা হইতে এই কালস্বরূপকে দূর করিবার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিকটে বিনতি কর। 18 তখন তিনি ফরৌণের নিকট হইতে বাহিরে গিয়া সদাপ্রভুর নিকটে বিনতি করিলেন; 19 আর সদাপ্রভু অতি প্রবল পশ্চিম বায়ু আনিলেন, তাহা পঙ্গপালদিগকে উঠাইয়া লইয়া সূফসাগরে তাড়াইয়া দিল, তাহাতে মিসরের সমস্ত সীমাতে একটাও পঙ্গপাল থাকিল না। 20 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করিলেন, আর তিনি ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে ছাড়িয়া দিলেন না।
21 পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন, তুমি আকাশের দিকে হস্ত বিস্তার কর; তাহাতে মিসর দেশে অন্ধকার হইবে, ও সেই অন্ধকার স্পর্শনীয় হইবে। 22 পরে মোশি আকাশের দিকে হস্ত বিস্তার করিলে তিন দিন পর্যন্ত সমস্ত মিসর দেশে গাঢ় অন্ধকার হইল। 23 তিন দিন পর্যন্ত কেহ কাহারও মুখ দেখিতে পাইল না, এবং কেহ আপন স্থান হইতে উঠিল না; কিন্তু ইস্রায়েল-সন্তান সকলের নিমিত্তে তাহাদের বাসস্থানে আলো ছিল।
24 তখন ফরৌণ মোশিকে ডাকাইয়া কহিলেন, যাও, তোমরা গিয়া সদাপ্রভুর সেবা কর; কেবল তোমাদের মেষপাল ও গরুর পাল থাকুক; তোমাদের শিশুগণও তোমাদের সঙ্গে যাউক। 25 মোশি কহিলেন, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করণার্থে আমাদের হস্তে বলি ও হোমদ্রব্য সমর্পণ করা আপনার কর্তব্য। 26 আমাদের সহিত আমাদের পশুগণও যাইবে, একটি খুরও অবশিষ্ট থাকিবে না; কেননা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবার্থে তাহাদের মধ্য হইতে বলি লইতে হইবে, এবং কি কি দিয়া সদাপ্রভুর সেবা করিব, তাহা সেই স্থানে উপস্থিত না হইলে আমরা জানিতে পারি না। 27 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করিলেন, আর তিনি তাহাদিগকে ছাড়িয়া দিতে সম্মত হইলেন না। 28 তখন ফরৌণ তাঁহাকে কহিলেন, আমার সম্মুখ হইতে দূর হও, সাবধান, আমার মুখ আর কখনও দেখিও না; কেননা যে দিন আমার মুখ দেখিবে, সেই দিন মরিবে। 29 মোশি কহিলেন, ভালই বলিয়াছেন, আমি আপনার মুখ আর কখনও দেখিব না।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy