যিহোশূয়ের পুস্তক 10
10
পাঁচজন রাজার বিরুদ্ধে জয়লাভ
1জেরুশালেমের#10:1 জেরুশালেম তৎকালে যিবুষীদের নগরী ছিল। অধিপতি অদোনি-সেদক শুনতে পেলেন যে যিহোশূয় অয় নগরী অধিকার করে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছেন। যিরিহো ও তার অধিপতির ও যে দশা তিনি করেছিলেন, অয় এবং তার অধিপতিদেরও যে দশা তিনি করেছিলেন, অয় এবং তার অধিপতিদেরও তিনি সেই দশাই করেছেন। গিবিয়োনের লোকেরা ইসরায়েলীদের সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করেছে ও তাদের সঙ্গেই রয়েছে। 2এ সব কথা শুনে অদোনি-সেদক খুব ভয় পেলেন কারণ গিবিয়োন নগরটি ছিল রাজধানীর মত বড়, অয়ের চেয়েও বড় এবং সেখানকার লোকেরাও ছিল বীর যোদ্ধা। 3জেরুশালেমের অধিপতি অদোনি-সেদক তখন হিব্রোণের রাজা হোহম, যরক্ষুৎ-এর রাজা পিরাম, লাখীশের রাজা যাফিয়ের এবং ইগলোনের রাজা দবীরের কাছে দূত পাঠিয়ে প্রস্তাব করলেন, 4আপনারা এসে আমাকে সাহায্য করুন। আসুন, আমরা সকলে মিলে গিবিয়োনীদের আক্রমণ করি কারণ ওরা যিহোশূয় এবং ইসরায়েলীদের সঙ্গে সন্ধি করেছে। 5ইমোরীদের এই পাঁচজন রাজা, অর্থাৎ জেরুশালেম, হিব্রোণ, যরক্ষুৎ, লাখীশ এবং ইগলোনের রাজারা সৈন্যসামন্তসহ সম্মিলিত হয়ে গিবিয়োনের সামনে ছাউনি ফেললেন এবং ঐ নগর আক্রমণ করলেন। 6গিবিয়োনের অধিবাসীরা তখন গিল্গলে যিহোশূয়ের শিবিরে লোক পাঠিয়ে আবেদন জানাল, আপনার এই দাসদের পরিত্যাগ করবেন না, তাড়াতাড়ি এসে আমাদের সাহায্য ও উদ্ধার করুন, কারণ পার্বত্য অঞ্চলের ইমোরীদের রাজারা আমাদের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছে 7যিহোশূয় তখন সমস্ত সৈন্য ও বীর যোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে গিল্গল থেকে যাত্রা করলেন।
8প্রভু পরমেশ্বর যিহোশূয়কে বললেন, তুমি ওদের ভয় করো না, আমি তোমার হাতে ওদের সমর্পণ করেছি, ওদের কেউ তোমার সম্মুখে দাঁড়াতে পারবে না। 9গিল্গল থেকে সারা রাত পথ হেঁটে যিহোশূয় অতর্কিতে এসে তাদের উপর চড়াও হলেন। 10ইসরায়েলীদের সম্মুখে প্রভু পরমেশ্বর তাদের দিশেহারা করে দিলেন এবং যিহোশূয় গিবিয়োনে তাদের চূড়ান্ত ভাবে পরাস্ত করলেন। তিনি বেথ-হোরোণের গিরিপথ ধরে তাদের পিছনে তাড়া করে গেলেন এবং আসেকা ও মাক্কেদা পর্যন্ত তাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে গেলেন। 11ইসরায়েলীদের সম্মুখ থেকে তারা যখন বেথ-হোরোণের গিরিপথ ধরে পালিয়ে যাচ্ছিল, প্রভু পরমেশ্বর তখন আসেকা পর্যন্ত সারা পথে তাদের উপর আকাশ থেকে ঘোরতর শিলাবৃষ্টি করলেন, ফলে ইসরায়েলীদের তরবারির আঘাতে যত লোক নিহত হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশী লোক মারা পড়ল শিলাবৃষ্টিতে। সেই শিলাগুলির আকার ছিল প্রকাণ্ড।
12প্রভু পরমেশ্বর যে দিন ইসরায়েলীদের হাতে ইমোরীদের সমর্পণ করলেন, সেদিন যিহোশূয় প্রভু পরমেশ্বরের কাছে আবেদন জানালেন আর ইসরায়েলীদের সাক্ষাতে বললেনঃ
“ হে সূর্য, স্থির হয়ে থাক
গিবিয়োনের আকাশে,
চন্দ্র, তুমি স্থির হও আয়ালোন উপত্যকায়।
13সূর্য স্থির হল, চন্দ্রেরও গতি হল স্তব্ধ যতক্ষণ না সেই জাতি তার শত্রুদের উপর গ্রহণ করল প্রতিশোধ।” যাশের গ্রন্থে লেখা আছে এই কাহিনী। মধ্যগগনে সূর্য স্থির হয়ে রইল, সূর্যাস্ত হতে প্রায় পুরো এক দিন দেরী হল।#২ শমু 1:18 14এর আগে কিম্বা এই দিনটির পরে কোন মানুষের আবেদনে প্রভু পরমেশ্বর এমনভাবে সাড়া দেন নি, কারণ সেদিন প্রভু পরমেশ্বের স্বয়ং ইসরায়েলীদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। 15এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে গিল্গলের শিবিরে ফিরে এলেন।
পাঁচজন ইমরী রাজার পরাজয় ও মৃত্যু
16ঐ পাঁচজন রাজা পালিয়ে গিয়ে মাক্কেদার এক গুহায় লুকিয়ে রইলেন। 17যিহোশূয় সংবাদ পেলেন যে তাঁদের মাক্কেদার গুহায় লুকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। 18তিনি তখন নির্দেশ দিলেন, তোমরা কতকগুলো বড় বড় পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে গুহার মুখে চাপা দাও এবং কয়েক জনকে সেখানে পাহারায় রাখ। 19তারপর দেরী না করে তোমরা শত্রুদের পিছনে তাড়া কর, তাদের আক্রমণ কর, নিজেদের নগরে তাদের ঢুকতে দিও না। তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের হাতে তাদের সমপর্ণ করেছেন। 20যিহোশূয়ের নেতৃত্বে ইসরায়েলীদের প্রচণ্ড আক্রমণে তারা সমূলে ধ্বংস হল, কেবল মাত্র কয়েকজন অবশিষ্ট লোক পালিয়ে গিয়ে প্রাচীরঘেরা নগরগুলিতে আশ্রয় নিল। 21ইসরায়েলী সেনাবাহিনী তখন নিরাপদে মাক্কেদার ঘাঁটিতে যিহোশূয়ের কাছে ফিরে এল। দেশের মধ্যে কেউ আর ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস পর্যন্ত করল না।
22যিহোশূয় এবারে বললেন, তোমরা এখন গুহার মুখ খুলে ঐ পাঁচজন রাজাকে বার করে আমার কাছে নিয়ে এস। 23তারা তা-ই করল। জেরুশালেম, হিব্রোণ, মারক্ষুৎ, লাখীশ ও ইগলোন এই পাঁচ জায়গার পাঁচজন রাজাকে তারা গুহা থেকে বার করে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে এল। 24ঐ রাজাদের তাঁর কাছে নিয়ে আসার পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে ডাকলেন এবং তাঁর সঙ্গে যে সৈন্যরা যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের নায়কদের বললেন, তোমরা এগিয়ে এসে এই রাজাদের ঘাড়ে পা তুলে দাও। তারা এগিয়ে এসে তাঁদের ঘাড়ে পা রাখল। 25যিহোশূয় তাঁদের বললেন, তোমরা ভয় পেয়ো না কিম্বা নিরাশ হয়ো না। দৃঢ় হও, সাহস কর। তোমরা যে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে প্রভু পরমেশ্বর তাদের সকলের এই দশা করবেন। 26এ কথা বলে তিনি ঐ রাজাদের বধ করলেন এবং তাঁদের দেহ পাঁচটি গাছে ঝুলিয়ে দিলেন। সারাদিন তাদের দেহ সেখানে ঝুলে রইল। 27সূর্যাস্তের সময় যিহোশূয়ের নির্দেশে তাদের শব গাছ থেকে নামানো হল এবং যে গুহায় তাঁরা লুকিয়েছিলেন সেই গুহাতেই সেগুলি নিক্ষেপ করা হল। গুহার মুখে কতকগুলো বড় বড় পাথর চাপা দেওয়া হল, সেগুলি সেখানে আজও আছে।
যিহোশূয়ের দক্ষিণদেশে অধিকার
28সেই দিনই যিহোশূয় মাক্কেদা অধিকার করলেন এবং সেখানকার রাজা ও অধিবাসীদের হত্যা করলেন। সেখানকার সমস্ত প্রাণীকে তিনি নিঃশেষে ধ্বংস করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না। যিরিহোর রাজার যে দশা তিনি করেছিলেন, মাক্কেদার রাজারও তিনি সেই দশা করলেন। 29এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে মাক্কেদা থেকে লিব্নাতে গেলেন এবং লিব্না আক্রমণ করলেন। 30প্রভু পরমেশ্বর নগরটি ও সেখানকার অধিবাসীদের ইসরায়েলীদের হাতে সমপর্ণ করলেন। তারা লিব্না ও সেখানকার অধিবাসীদের ধ্বংস করল, কাউকে রেহাই দিল না। যিরিহোর রাজার যে অবস্থা হয়েছিল, এখানকার রাজারও সেই অবস্থা করা হল।
31লিব্না থেকে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে লাখীশে গিয়ে শিবির স্থাপন করলেন এবং লাখীশ আক্রমণ করলেন। 32প্রভু পরমেশ্বর লাখীশ নগরটিও ইসরায়েলীদের হাতে সমপর্ণ করলেন। দ্বিতীয় দিনে তারা সেটি দখল করল এবং লিব্নায় তারা যা করেছিল সেইভাবে লাখীশ ও সেখানকার সমস্ত প্রাণীকে ধ্বংস করল।
33এই সময় গেজেরের রাজা হোরাম লাখীশের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। যিহোশূয় তাঁকে ও তাঁর লোকজনকেও ধ্বংস করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না। 34এরপর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনের দিকে অভিযান করলেন এবং সেই নগর অবরোধ করে আক্রমণ করলেন। 35ইসরায়েলীরা সেদিন সেই নগর অধিকার করে লাখীশের মতই সেখানকার সমস্ত লোককে হত্যা করল।
36ইগ্লোন থেকে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সঙ্গে নিয়ে হিব্রোণের দিকে অভিযান করলেন। ইসরায়েলীরা সেই নগর আক্রমণ করে দখল করল। 37তারা সেই নগর, সেখানকার রাজা এবং তাঁর অধীনস্থ অন্যান্য নগর ও তার অধিবাসীদের বধ করল। ইগলোনে তিনি যেমন করেছিলেন তেমনি এখানেও তিনি কাউকে রেহাই দিলেন না। হিব্রোণ ও সেখানকার অধিবাসীদের তিনি নিঃশেষে ধ্বংস করলেন।
38এর পরে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে ফিরে এসে দবীর আক্রমণ করলেন। 39ইসরায়েলীরা সেই নগরটি এবং সেখানকার রাজার অধীনস্থ জনপদগুলি অধিকার করল। সেই রাজাকে ও নগরের অধিবাসীদের আক্রমণ করে তারা হত্যা করল। যিহোশূয় হিব্রোণ ও লিব্না নগর এবং সেখানকার রাজাদের যে দশা করেছিলেন, দবীর ও তার রাজারও সেই দশা করলেন, কাউকে তিনি অব্যাহতি দিলেন না।
40এই ভাবে যিহোশূয় পার্বত্য অঞ্চল, দক্ষিণের ঊষর অঞ্চল, সমতলভূমি ও পশ্চিমের পাহাড়তলী এলাকাসহ সমগ্র দক্ষিণ দেশ অধিকার করলেন সেইসঙ্গে এই সব অঞ্চলের অধিপতিদেরও বধ করলেন সেইসঙ্গে এই সব অঞ্চলের অধিপতিদেরও বধ করলেন, কাউকে অবশিষ্ট রাখলেন না। ইসরায়েলীদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি জীবিত সমস্ত প্রাণীকে নিঃশেষে সংহার করলেন। 41এইভাবে যিহোশূয় কাদেশ-বার্ণেয় থেকে গাজা পর্যন্ত এবং গিবিয়োন পর্যন্ত গোশেন প্রদেশের সমস্ত অঞ্চল আক্রমণ করে অধিকার করে নিলেন। 42যিহোশূয় একটিমাত্র অভিযানেই সেখানকার রাজাদের পরাস্ত করলেন এবং এই সব রাজ্য দখল করে নিলেন কারণ ইসরায়েলীদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর স্বয়ং তাদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করছিলেন। 43এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে গিল্গলের ছাউনিতে ফিরে এলেন।
Currently Selected:
যিহোশূয়ের পুস্তক 10: BENGALCL-BSI
Highlight
Share
Copy

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.
যিহোশূয়ের পুস্তক 10
10
পাঁচজন রাজার বিরুদ্ধে জয়লাভ
1জেরুশালেমের#10:1 জেরুশালেম তৎকালে যিবুষীদের নগরী ছিল। অধিপতি অদোনি-সেদক শুনতে পেলেন যে যিহোশূয় অয় নগরী অধিকার করে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছেন। যিরিহো ও তার অধিপতির ও যে দশা তিনি করেছিলেন, অয় এবং তার অধিপতিদেরও যে দশা তিনি করেছিলেন, অয় এবং তার অধিপতিদেরও তিনি সেই দশাই করেছেন। গিবিয়োনের লোকেরা ইসরায়েলীদের সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করেছে ও তাদের সঙ্গেই রয়েছে। 2এ সব কথা শুনে অদোনি-সেদক খুব ভয় পেলেন কারণ গিবিয়োন নগরটি ছিল রাজধানীর মত বড়, অয়ের চেয়েও বড় এবং সেখানকার লোকেরাও ছিল বীর যোদ্ধা। 3জেরুশালেমের অধিপতি অদোনি-সেদক তখন হিব্রোণের রাজা হোহম, যরক্ষুৎ-এর রাজা পিরাম, লাখীশের রাজা যাফিয়ের এবং ইগলোনের রাজা দবীরের কাছে দূত পাঠিয়ে প্রস্তাব করলেন, 4আপনারা এসে আমাকে সাহায্য করুন। আসুন, আমরা সকলে মিলে গিবিয়োনীদের আক্রমণ করি কারণ ওরা যিহোশূয় এবং ইসরায়েলীদের সঙ্গে সন্ধি করেছে। 5ইমোরীদের এই পাঁচজন রাজা, অর্থাৎ জেরুশালেম, হিব্রোণ, যরক্ষুৎ, লাখীশ এবং ইগলোনের রাজারা সৈন্যসামন্তসহ সম্মিলিত হয়ে গিবিয়োনের সামনে ছাউনি ফেললেন এবং ঐ নগর আক্রমণ করলেন। 6গিবিয়োনের অধিবাসীরা তখন গিল্গলে যিহোশূয়ের শিবিরে লোক পাঠিয়ে আবেদন জানাল, আপনার এই দাসদের পরিত্যাগ করবেন না, তাড়াতাড়ি এসে আমাদের সাহায্য ও উদ্ধার করুন, কারণ পার্বত্য অঞ্চলের ইমোরীদের রাজারা আমাদের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছে 7যিহোশূয় তখন সমস্ত সৈন্য ও বীর যোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে গিল্গল থেকে যাত্রা করলেন।
8প্রভু পরমেশ্বর যিহোশূয়কে বললেন, তুমি ওদের ভয় করো না, আমি তোমার হাতে ওদের সমর্পণ করেছি, ওদের কেউ তোমার সম্মুখে দাঁড়াতে পারবে না। 9গিল্গল থেকে সারা রাত পথ হেঁটে যিহোশূয় অতর্কিতে এসে তাদের উপর চড়াও হলেন। 10ইসরায়েলীদের সম্মুখে প্রভু পরমেশ্বর তাদের দিশেহারা করে দিলেন এবং যিহোশূয় গিবিয়োনে তাদের চূড়ান্ত ভাবে পরাস্ত করলেন। তিনি বেথ-হোরোণের গিরিপথ ধরে তাদের পিছনে তাড়া করে গেলেন এবং আসেকা ও মাক্কেদা পর্যন্ত তাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে গেলেন। 11ইসরায়েলীদের সম্মুখ থেকে তারা যখন বেথ-হোরোণের গিরিপথ ধরে পালিয়ে যাচ্ছিল, প্রভু পরমেশ্বর তখন আসেকা পর্যন্ত সারা পথে তাদের উপর আকাশ থেকে ঘোরতর শিলাবৃষ্টি করলেন, ফলে ইসরায়েলীদের তরবারির আঘাতে যত লোক নিহত হয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশী লোক মারা পড়ল শিলাবৃষ্টিতে। সেই শিলাগুলির আকার ছিল প্রকাণ্ড।
12প্রভু পরমেশ্বর যে দিন ইসরায়েলীদের হাতে ইমোরীদের সমর্পণ করলেন, সেদিন যিহোশূয় প্রভু পরমেশ্বরের কাছে আবেদন জানালেন আর ইসরায়েলীদের সাক্ষাতে বললেনঃ
“ হে সূর্য, স্থির হয়ে থাক
গিবিয়োনের আকাশে,
চন্দ্র, তুমি স্থির হও আয়ালোন উপত্যকায়।
13সূর্য স্থির হল, চন্দ্রেরও গতি হল স্তব্ধ যতক্ষণ না সেই জাতি তার শত্রুদের উপর গ্রহণ করল প্রতিশোধ।” যাশের গ্রন্থে লেখা আছে এই কাহিনী। মধ্যগগনে সূর্য স্থির হয়ে রইল, সূর্যাস্ত হতে প্রায় পুরো এক দিন দেরী হল।#২ শমু 1:18 14এর আগে কিম্বা এই দিনটির পরে কোন মানুষের আবেদনে প্রভু পরমেশ্বর এমনভাবে সাড়া দেন নি, কারণ সেদিন প্রভু পরমেশ্বের স্বয়ং ইসরায়েলীদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। 15এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে গিল্গলের শিবিরে ফিরে এলেন।
পাঁচজন ইমরী রাজার পরাজয় ও মৃত্যু
16ঐ পাঁচজন রাজা পালিয়ে গিয়ে মাক্কেদার এক গুহায় লুকিয়ে রইলেন। 17যিহোশূয় সংবাদ পেলেন যে তাঁদের মাক্কেদার গুহায় লুকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। 18তিনি তখন নির্দেশ দিলেন, তোমরা কতকগুলো বড় বড় পাথর গড়িয়ে নিয়ে গিয়ে গুহার মুখে চাপা দাও এবং কয়েক জনকে সেখানে পাহারায় রাখ। 19তারপর দেরী না করে তোমরা শত্রুদের পিছনে তাড়া কর, তাদের আক্রমণ কর, নিজেদের নগরে তাদের ঢুকতে দিও না। তোমাদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর তোমাদের হাতে তাদের সমপর্ণ করেছেন। 20যিহোশূয়ের নেতৃত্বে ইসরায়েলীদের প্রচণ্ড আক্রমণে তারা সমূলে ধ্বংস হল, কেবল মাত্র কয়েকজন অবশিষ্ট লোক পালিয়ে গিয়ে প্রাচীরঘেরা নগরগুলিতে আশ্রয় নিল। 21ইসরায়েলী সেনাবাহিনী তখন নিরাপদে মাক্কেদার ঘাঁটিতে যিহোশূয়ের কাছে ফিরে এল। দেশের মধ্যে কেউ আর ইসরায়েলীদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলার সাহস পর্যন্ত করল না।
22যিহোশূয় এবারে বললেন, তোমরা এখন গুহার মুখ খুলে ঐ পাঁচজন রাজাকে বার করে আমার কাছে নিয়ে এস। 23তারা তা-ই করল। জেরুশালেম, হিব্রোণ, মারক্ষুৎ, লাখীশ ও ইগলোন এই পাঁচ জায়গার পাঁচজন রাজাকে তারা গুহা থেকে বার করে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে এল। 24ঐ রাজাদের তাঁর কাছে নিয়ে আসার পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে ডাকলেন এবং তাঁর সঙ্গে যে সৈন্যরা যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের নায়কদের বললেন, তোমরা এগিয়ে এসে এই রাজাদের ঘাড়ে পা তুলে দাও। তারা এগিয়ে এসে তাঁদের ঘাড়ে পা রাখল। 25যিহোশূয় তাঁদের বললেন, তোমরা ভয় পেয়ো না কিম্বা নিরাশ হয়ো না। দৃঢ় হও, সাহস কর। তোমরা যে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে প্রভু পরমেশ্বর তাদের সকলের এই দশা করবেন। 26এ কথা বলে তিনি ঐ রাজাদের বধ করলেন এবং তাঁদের দেহ পাঁচটি গাছে ঝুলিয়ে দিলেন। সারাদিন তাদের দেহ সেখানে ঝুলে রইল। 27সূর্যাস্তের সময় যিহোশূয়ের নির্দেশে তাদের শব গাছ থেকে নামানো হল এবং যে গুহায় তাঁরা লুকিয়েছিলেন সেই গুহাতেই সেগুলি নিক্ষেপ করা হল। গুহার মুখে কতকগুলো বড় বড় পাথর চাপা দেওয়া হল, সেগুলি সেখানে আজও আছে।
যিহোশূয়ের দক্ষিণদেশে অধিকার
28সেই দিনই যিহোশূয় মাক্কেদা অধিকার করলেন এবং সেখানকার রাজা ও অধিবাসীদের হত্যা করলেন। সেখানকার সমস্ত প্রাণীকে তিনি নিঃশেষে ধ্বংস করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না। যিরিহোর রাজার যে দশা তিনি করেছিলেন, মাক্কেদার রাজারও তিনি সেই দশা করলেন। 29এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে মাক্কেদা থেকে লিব্নাতে গেলেন এবং লিব্না আক্রমণ করলেন। 30প্রভু পরমেশ্বর নগরটি ও সেখানকার অধিবাসীদের ইসরায়েলীদের হাতে সমপর্ণ করলেন। তারা লিব্না ও সেখানকার অধিবাসীদের ধ্বংস করল, কাউকে রেহাই দিল না। যিরিহোর রাজার যে অবস্থা হয়েছিল, এখানকার রাজারও সেই অবস্থা করা হল।
31লিব্না থেকে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে লাখীশে গিয়ে শিবির স্থাপন করলেন এবং লাখীশ আক্রমণ করলেন। 32প্রভু পরমেশ্বর লাখীশ নগরটিও ইসরায়েলীদের হাতে সমপর্ণ করলেন। দ্বিতীয় দিনে তারা সেটি দখল করল এবং লিব্নায় তারা যা করেছিল সেইভাবে লাখীশ ও সেখানকার সমস্ত প্রাণীকে ধ্বংস করল।
33এই সময় গেজেরের রাজা হোরাম লাখীশের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। যিহোশূয় তাঁকে ও তাঁর লোকজনকেও ধ্বংস করলেন, কাউকে রেহাই দিলেন না। 34এরপর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনের দিকে অভিযান করলেন এবং সেই নগর অবরোধ করে আক্রমণ করলেন। 35ইসরায়েলীরা সেদিন সেই নগর অধিকার করে লাখীশের মতই সেখানকার সমস্ত লোককে হত্যা করল।
36ইগ্লোন থেকে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সঙ্গে নিয়ে হিব্রোণের দিকে অভিযান করলেন। ইসরায়েলীরা সেই নগর আক্রমণ করে দখল করল। 37তারা সেই নগর, সেখানকার রাজা এবং তাঁর অধীনস্থ অন্যান্য নগর ও তার অধিবাসীদের বধ করল। ইগলোনে তিনি যেমন করেছিলেন তেমনি এখানেও তিনি কাউকে রেহাই দিলেন না। হিব্রোণ ও সেখানকার অধিবাসীদের তিনি নিঃশেষে ধ্বংস করলেন।
38এর পরে যিহোশূয় ইসরায়েলীদের নিয়ে ফিরে এসে দবীর আক্রমণ করলেন। 39ইসরায়েলীরা সেই নগরটি এবং সেখানকার রাজার অধীনস্থ জনপদগুলি অধিকার করল। সেই রাজাকে ও নগরের অধিবাসীদের আক্রমণ করে তারা হত্যা করল। যিহোশূয় হিব্রোণ ও লিব্না নগর এবং সেখানকার রাজাদের যে দশা করেছিলেন, দবীর ও তার রাজারও সেই দশা করলেন, কাউকে তিনি অব্যাহতি দিলেন না।
40এই ভাবে যিহোশূয় পার্বত্য অঞ্চল, দক্ষিণের ঊষর অঞ্চল, সমতলভূমি ও পশ্চিমের পাহাড়তলী এলাকাসহ সমগ্র দক্ষিণ দেশ অধিকার করলেন সেইসঙ্গে এই সব অঞ্চলের অধিপতিদেরও বধ করলেন সেইসঙ্গে এই সব অঞ্চলের অধিপতিদেরও বধ করলেন, কাউকে অবশিষ্ট রাখলেন না। ইসরায়েলীদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বরের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি জীবিত সমস্ত প্রাণীকে নিঃশেষে সংহার করলেন। 41এইভাবে যিহোশূয় কাদেশ-বার্ণেয় থেকে গাজা পর্যন্ত এবং গিবিয়োন পর্যন্ত গোশেন প্রদেশের সমস্ত অঞ্চল আক্রমণ করে অধিকার করে নিলেন। 42যিহোশূয় একটিমাত্র অভিযানেই সেখানকার রাজাদের পরাস্ত করলেন এবং এই সব রাজ্য দখল করে নিলেন কারণ ইসরায়েলীদের আরাধ্য ঈশ্বর প্রভু পরমেশ্বর স্বয়ং তাদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করছিলেন। 43এর পর যিহোশূয় ইসরায়েলীদের সকলকে নিয়ে গিল্গলের ছাউনিতে ফিরে এলেন।
Currently Selected:
:
Highlight
Share
Copy

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in
Bengali C.L. Bible, পবিএ বাইবেল C.L.
Copyright © 2016 by The Bible Society of India
Used by permission. All rights reserved worldwide.