যিশাইয় ভূমিকা

ভূমিকা
খ্রীষ্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীর শেষার্ধে যিরূশালেমে যিশাইয় নামে একজন মহান ভাববাদী বাস করিতেন। এই পুস্তকটি তাঁহারই নামানুসারে ‘যিশাইয় ভাববাদীর পুস্তক’ নামে পরিচয় লাভ করিয়াছে। পুস্তকটিকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যাইতে পারে:
১। ১-৩৯ অধ্যায়ে পাওয়া যাইবে- দক্ষিণ রাজ্য যিহূদাকে তাহার পরাক্রান্ত এক প্রতিবাসী অশূরীয় রাজ্য ভীতি প্রদর্শন কালের সমস্ত ঘটনাবলির কথা। যিশাইয় দেখিয়াছিলেন, যিহূদীদের জীবনের প্রকৃত বিপদসঙ্কেত শুধুমাত্র শক্তিশালী রাজ্য অশূরীয়ার নিকট হইতেই নয় কিন্তু এই সঙ্কেত নিহিত রহিয়াছে জাতির নিজের পাপ ও ঈশ্বরের প্রতি অবাধ্যতা এবং তাঁহার প্রতি তাহাদের আস্থা ও নির্ভরতার অভাব। এই কথা তিনি কথায় ও কাজে বিশদভাবে বুঝাইয়া দিয়াছিলেন এবং সমস্ত প্রজা ও নেতৃবর্গকে ন্যায়পরায়ণ ও ধর্মনিষ্ঠ জীবন যাপনের জন্য আহ্বান জানাইয়াছিলেন। ঈশ্বরের প্রতি অবাধ্যতা তাহাদের জীবনে চরম বিপর্যয় ও ধ্বংস আনিয়া দিবে- এই সম্বন্ধে সাবধান করিয়া দিয়াছিলেন। যিশাইয় সেই সাথে বিশ্বব্যাপী এক শান্তির যুগেরও ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছিলেন, যখন দায়ূদ কুল-তিলকের আগমন হইবে, তিনি হইবেন আদর্শ রাজা।
২। ৪০-৫৫ অধ্যায়ে পাওয়া যাইবে সেই সময়ের কথা, যখন যিহূদার বহু লোক বাবিলে নির্বাসিত হইয়া নিপীড়ন, নির্যাতন ও নৈরাশ্যের অন্ধকারে দিন কাটাইতেছে। ভাববাদী ঘোষণা করিলেন যে, ঈশ্বর তাঁহার প্রজাদের মুক্ত করিয়া, যিরূশালেমে তাহাদের গৃহে ফিরাইয়া আনিয়া এক নূতন জীবন শুরু করাইতে চলিয়াছেন। এই অধ্যায়গুলিতে একটি লক্ষণীয় বিষয় এই যে, ঈশ্বরই হইলেন ইতিহাসের নিয়ন্ত্রণকর্তা সদাপ্রভু, এবং তাঁহার প্রজাদের জন্য তাঁহার পরিকল্পনায় সমস্ত জাতিই যুক্ত হইয়াছে যাহারা ইস্রায়েলের মাধ্যমে তাঁহার আশীর্বাদ লাভ করিবে। “সদাপ্রভুর দাস” সম্বন্ধে অনুচ্ছেদগুলি পুরাতন নিয়মের সুপরিচিত অংশগুলির অন্যতম।
৩। ৫৫-৬৬ অধ্যায়ের অধিকাংশ স্থানেই আছে, যিরূশালেমে প্রত্যাগত প্রজাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা এবং তাহাদের জাতির নিকটে ঈশ্বরের দেওয়া প্রতিশ্রুতির পূর্ণতা সম্বন্ধে ঈশ্বরের পুনরায় নিশ্চয়তালাভ। ইহা ব্যতীত, ন্যায়বিচার ও ধর্মনিষ্ঠা এবং তাহার সহিত বিশ্রামদিন পালন, বলি উৎসর্গ ও প্রার্থনা সম্বন্ধে বিশেষভাবে এইস্থানে বলা হইয়াছে। ৬১:১-২ পদ এই পুস্তকের একটি বিশেষ লক্ষণীয় অংশ, যাহা যীশু তাঁহার পরিচর্যা কার্যের শুভারম্ভে এই উদ্দেশ্যে তাঁহার আহ্বান লাভের কথা ব্যবহার করিয়াছিলেন।
বিষয়বস্তুর রূপরেখা:
সাবধানবাণী ও প্রতিশ্রুতি - ১:১—১২:৬
জাতিবর্গের দণ্ড - ১৩:১—২৩:১৮
ঈশ্বরের বিচার - ২৪:১—২৭:১৩
আরও সাবধানবাণী ও প্রতিশ্রুতি - ২৮:১—৩৫:১০
যিহূদা-রাজ হিষ্কিয় ও অশূরীয়গণ - ৩৬:১—৩৯:৮
প্রতিশ্রুতি ও আশার সংবাদ - ৪০:১—৫৫:১৩
সাবধানবাণী ও প্রতিশ্রুতি - ৫৬:১—৬৬:২৪

Marker

Del

Kopier

None

Vil du ha høydepunktene lagret på alle enhetene dine? Registrer deg eller logg på