YouVersion Logo
Search Icon

২ বাদশাহ্‌নামা 3

3
মোয়াবের বাদশাহ্‌র বিদ্রোহ
1এহুদার বাদশাহ্‌ যিহোশাফটের রাজত্বের আঠারো বছরের সময় ইসরাইলের বাদশাহ্‌ আহাবের ছেলে যোরাম বাদশাহ্‌ হলেন। তিনি সামেরিয়াতে থেকে বারো বছর রাজত্ব করেছিলেন। 2মাবুদের চোখে যা খারাপ তিনি তা-ই করতেন, তবে তিনি তাঁর বাবা-মায়ের মত ছিলেন না। তাঁর বাবা বাল দেবতার পূজার জন্য যে পাথর দাঁড় করিয়েছিলেন তা তিনি দূর করে দিয়েছিলেন। 3কিন্তু নবাটের ছেলে ইয়ারাবিম ইসরাইলকে দিয়ে যে সব গুনাহ্‌ করিয়েছিলেন যোরামও তা করতে থাকলেন। তিনি তা থেকে ফিরলেন না।
4মোয়াবের বাদশাহ্‌ মেশার অনেক ভেড়া ছিল। তিনি ইসরাইলের বাদশাহ্‌কে খাজনা হিসাবে এক লক্ষ ভেড়ার বাচ্চা ও এক লক্ষ ভেড়ার লোম দিতেন। 5কিন্তু আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াবের বাদশাহ্‌ ইসরাইলের বাদশাহ্‌র বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। 6কাজেই বাদশাহ্‌ যোরাম তখন সামেরিয়া থেকে বের হয়ে সমস্ত ইসরাইলীয় সৈন্য জমায়েত করলেন। 7এছাড়া এহুদার বাদশাহ্‌ যিহোশাফটকেও তিনি এই খবর পাঠালেন, “মোয়াবের বাদশাহ্‌ আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। আপনি কি আমার সংগে মোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাবেন?”
জবাবে তিনি বললেন, “আমি আপনার সংগে যাব। আমিও যা আপনিও তা, আমার লোক আপনারই লোক, আমার ঘোড়া আপনারই ঘোড়া।” 8যিহোশাফট এও জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কোন্‌ পথে হামলা করব?”
জবাবে যোরাম বললেন, “ইদোমের মরুভূমির মধ্য দিয়ে।”
9তখন এহুদার বাদশাহ্‌ ও ইদোমের বাদশাহ্‌র সংগে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ বের হয়ে পড়লেন। তাঁরা সাত দিন ধরে ঘুরপথে চললেন। তখন সৈন্যদলের জন্য কিংবা তাদের সংগেকার পশুগুলোর জন্য কোন পানি ছিল না।
10তা দেখে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ বললেন, “হায়, হায়! মাবুদ মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্যই কি আমাদের এই তিন বাদশাহ্‌কে একসংগে ডেকেছেন?”
11যিহোশাফট বললেন, “এখানে কি মাবুদের কোন নবী নেই যাঁর মধ্য দিয়ে আমরা মাবুদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারি?”
ইসরাইলের বাদশাহ্‌র একজন কর্মচারী জবাবে বলল, “শাফটের ছেলে আল-ইয়াসা এখানে আছেন। তিনি ইলিয়াসের সেবাকারী ছিলেন।”
12যিহোশাফট বললেন, “মাবুদের কালাম তাঁর কাছে আছে।” কাজেই ইসরাইলের বাদশাহ্‌, ইদোমের বাদশাহ্‌ ও যিহোশাফট আল-ইয়াসার কাছে গেলেন।
13আল-ইয়াসা ইসরাইলের বাদশাহ্‌কে বললেন, “আপনার সংগে আমার সম্বন্ধ কি? আপনি আপনার বাবা অথবা মায়ের নবীদের কাছে যান।”
জবাবে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ বললেন, “না, যাব না, কারণ মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্য আল্লাহ্‌ আমাদের তিন বাদশাহ্‌কে ডেকে একত্র করেছেন।”
14আল-ইয়াসা বললেন, “আমি যাঁর এবাদত করি সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র কসম যে, এহুদার বাদশাহ্‌ যিহোশাফট যদি এখানে না থাকতেন তবে আমি আপনার দিকে চেয়েও দেখতাম না, খেয়ালও করতাম না। 15এখন বীণা বাজায় এমন একজন লোককে আমার কাছে নিয়ে আসুন।”
লোকটি যখন বীণা বাজাচ্ছিল তখন মাবুদের শক্তি আল-ইয়াসার উপর আসল। 16-17আল-ইয়াসা বললেন, “মাবুদ আপনাদের এই উপত্যকায় অনেক খাদ তৈরী করতে বলছেন, কারণ আপনারা বাতাস কিংবা বৃষ্টি দেখতে না পেলেও এই উপত্যকা পানিতে ভরে যাবে আর আপনারা পানি খেতে পাবেন এবং আপনাদের গরু-ভেড়া ও অন্যান্য পশুও পানি খেতে পাবে। 18এটা মাবুদের কাছে সহজ কাজ। তা ছাড়া তিনি মোয়াব দেশটাও আপনাদের হাতে তুলে দেবেন। 19দেয়াল-ঘেরা প্রত্যেকটা শহর এবং প্রত্যেকটা বড় গ্রাম আপনারা ধ্বংস করে দেবেন। প্রত্যেকটা ভাল গাছ আপনারা কেটে ফেলবেন, পানির সমস্ত ঝর্ণাগুলো বন্ধ করে দেবেন এবং সব ভাল ভাল ক্ষেত পাথর দিয়ে নষ্ট করে দেবেন।” 20পরের দিন সকালবেলার কোরবানীর সময় ইদোম দেশের দিক থেকে পানি বয়ে এসে দেশটা পানিতে ভরে গেল।
21এর মধ্যে মোয়াবীয়রা শুনেছিল যে, সেই তিনজন বাদশাহ্‌ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন। কাজেই অস্ত্র ধরতে পারে এমন সব ছেলে-বুড়ো সবাইকে ডেকে এনে দেশের সীমানায় দাঁড় করানো হল। 22খুব সকালে যখন তারা ঘুম থেকে উঠল তখন সূর্য পানির উপর চক্‌মক্‌ করছিল। মোয়াবীয়দের কাছে সেই পানি রক্তের মত লাল মনে হল। 23তারা বলল, “ঐ যে রক্ত! বাদশাহ্‌রা যুদ্ধ করে নিশ্চয়ই একে অন্যকে হত্যা করেছেন। মোয়াবীয়রা, চল, আমরা গিয়ে লুট করি।”
24কিন্তু যখন মোয়াবীয়রা ইসরাইলের ছাউনির কাছে গেল তখন বনি-ইসরাইলরা বের হয়ে তাদের আক্রমণ করল আর মোয়াবীয়রা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল। বনি-ইসরাইলরা মোয়াবীয়দের মারতে মারতে তাদের দেশে ঢুকে পড়ল। 25তারা শহরগুলো ধ্বংস করে ফেলল আর প্রত্যেকে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে সমস্ত ভাল ক্ষেতগুলো ঢেকে ফেলল। তারা পানির সমস্ত ঝর্ণাগুলো বন্ধ করে দিল এবং ভাল ভাল গাছপালা সব কেটে ফেলল। কেবল মাত্র কীর্‌-হরাসত শহরটা তারা ধ্বংস করতে পারে নি, সেইজন্য ফিংগা হাতে সৈন্যেরা সেটা ঘেরাও করে আক্রমণ করল।
26মোয়াবের বাদশাহ্‌ যখন দেখলেন তিনি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন তখন সৈন্যদলের মধ্য দিয়ে ইদোমের বাদশাহ্‌র কাছে যাবার জন্য তাঁর সংগে সাতশো তলোয়ারধারীকে নিলেন, কিন্তু যেতে পারলেন না। 27তখন তিনি তাঁর প্রথম ছেলে, যে তাঁর পরে বাদশাহ্‌ হবে তাকে নিয়ে শহরের দেয়ালের উপরে বলি দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে কোরবানী করলেন। ইসরাইলের উপর ভয়ংকর রাগ হল, তাই বনি-ইসরাইলরা সেখান থেকে চলে গিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেল।

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy