YouVersion Logo
Search Icon

কাজীগণ 11

11
বিচারকর্তা যিপ্তহ
1ঐ সময়ে গিলিয়দীয় যিপ্তহ বলবান বীর ছিলেন; তিনি এক জন পতিতার পুত্র; তাঁর পিতা ছিলেন গিলিয়দ। 2আর গিলিয়দের স্ত্রী তাঁর জন্য কয়েকটি পুত্র প্রসব করলো; পরে সেই স্ত্রীজাত পুত্ররা যখন বড় হল, তখন যিপ্তহকে তাড়িয়ে দিয়ে বললো, আমাদের পিতৃকুলের মধ্যে তুমি অধিকার পাবে না, কেননা তুমি অপর এক স্ত্রীর পুত্র। 3তাতে যিপ্তহ তাঁর ভাইদের সম্মুখ থেকে পালিয়ে গিয়ে টোব দেশে প্রবাস করলেন। সেখানে কতকগুলো অসারচিত্ত লোক যিপ্তহের কাছে একত্র হল, তারা তাঁর সঙ্গে বাইরে যেত।
4কিছুকাল পরে অম্মোনীয়রা ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল। 5তখন ইসরাইলের সঙ্গে অম্মোনীয়রা যুদ্ধ করাতে গিলিয়দের প্রাচীনবর্গরা যিপ্তহকে টোব দেশ থেকে আনতে গেল। 6তারা যিপ্তহকে বললো, এসো, তুমি আমাদের নেতা হও, আমরা অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করবো। 7যিপ্তহ গিলিয়দের প্রাচীন লোকদেরকে বললেন, তোমরাই কি আমাকে ঘৃণা করে আমার পিতৃকুল থেকে আমাকে তাড়িয়ে দাও নি? এখন বিপদগ্রস্ত হয়েছ বলে আমার কাছে কেন আসলে? 8তখন গিলিয়দের প্রাচীনবর্গরা যিপ্তহকে বললো, এখন আমরা তোমার কাছে ফিরে এসেছি, যেন তুমি আমাদের সঙ্গে গিয়ে অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পার এবং আমাদের অর্থাৎ গিলিয়দ-নিবাসী সমস্ত লোকের প্রধান হও। 9তখন যিপ্তহ গিলিয়দের প্রধান ব্যক্তিদের বললেন, তোমরা যদি অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাকে পুনর্বার স্বদেশে নিয়ে যাও, আর মাবুদ যদি আমার হাতে তাদেরকে তুলে দেন, তবে আমিই কি তোমাদের প্রধান হব? 10তখন গিলিয়দের প্রধান ব্যক্তিরা যিপ্তহকে বললো, মাবুদ আমাদের মধ্যে সাক্ষী; আমরা অবশ্য তোমার কথা অনুসারে কাজ করবো। 11পরে যিপ্তহ গিলিয়দের প্রধান ব্যক্তিদের সঙ্গে গেলেন; তাতে লোকেরা তাঁকে তাদের প্রধান ও শাসনকর্তা করলো; পরে যিপ্তহ মিস্পাতে মাবুদের সাক্ষাতে নিজের সমস্ত কথা বললেন।
12পরে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের বাদশাহ্‌র কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, আমার সঙ্গে কি এমন প্রয়োজন যে, তুমি আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমার দেশে আসলে? 13তাতে অম্মোনীয়দের বাদশাহ্‌ যিপ্তহের দূতদেরকে বললেন, কারণ এই, ইসরাইল যখন মিসর থেকে আসে, তখন, অর্ণোন থেকে যব্বোক ও জর্ডান পর্যন্ত আমার ভূমি হরণ করেছিল; অতএব এখন সহিসালামতে তা ফিরিয়ে দাও। 14তাতে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের বাদশাহ্‌র কাছে পুনর্বার দূত পাঠালেন; 15তিনি তাঁকে বললেন, যিপ্তহ এই কথা বলেন, মোয়াবের ভূমি কিংবা অম্মোনীয়দের ভূমি ইসরাইল হরণ করে নি। 16কিন্তু মিসর থেকে আসার সময় ইসরাইল লোহিত সাগর পর্যন্ত মরুভূমির মধ্যে ভ্রমণ করে যখন কাদেশে উপস্থিত হয়, 17তখন ইদোমের বাদশাহ্‌র কাছে দূত পাঠিয়ে বলেছিল, আরজ করি, আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে দিন, কিন্তু ইদোমের বাদশাহ্‌ সেই কথায় কান দিলেন না; আবার সেই একই কথা মোয়াবের বাদশাহ্‌র কাছে বলে পাঠালে তিনিও সম্মত হলেন না; অতএব ইসরাইল কাদেশে রইলো। 18পরে তারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে গিয়ে ইদোম ও মোয়াব দেশ প্রদক্ষিণপূর্বক মোয়াব দেশের পূর্ব দিক দিয়ে এসে অর্ণোনের ওপারে শিবির স্থাপন করলো, মোয়াবের সীমার মধ্যে প্রবেশ করলো না, কেননা অর্ণোন মোয়াবের সীমা। 19পরে ইসরাইল হিষ্‌বোনের বাদশাহ্‌, আমোরীয়দের বাদশাহ্‌, সীহোনের কাছে দূত পাঠিয়ে তাঁকে বললো, আরজ করি, আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে নিজের স্থানে যেতে দিন। 20কিন্তু সীহোন ইসরাইলকে বিশ্বাস করে তাঁর সীমার মধ্য দিয়ে যেতে দিলেন না; সীহোন তাঁর সমস্ত লোক একত্র করে যহসে শিবির স্থাপন এবং ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। 21আর ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদ সীহোন ও তার সমস্ত লোককে ইসরাইলের হাতে তুলে দিলেন ও তারা তাদেরকে আক্রমণ করলো; এভাবে ইসরাইল সেই দেশ-নিবাসী আমোরীয়দের সমস্ত দেশ অধিকার করলো। 22তারা অর্ণোন থেকে যব্বোক পর্যন্ত ও মরুভূমি থেকে জর্ডান পর্যন্ত আমোরীয়দের সমস্ত অঞ্চল অধিকার করলো। 23সুতরাং ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদ তাঁর লোক ইসরাইলের সম্মুখে ইমোরীয়দেরকে অধিকারচ্যুত করলেন; এখন আপনি কি তাদের দেশ অধিকার করবেন? 24আপনার কমোশ দেব আপনাকে অধিকার করার জন্য যা দেন, আপনি কি তারই অধিকারী নন? আমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদ আমাদের সম্মুখে যাদেরকে অধিকারচ্যুত করেছেন, সেসব কিছুর অধিকারী আমরাই আছি। 25বলুন দেখি, মোয়াবের বাদশাহ্‌ সিপ্পোরের পুত্র বালাক থেকে আপনি কি শ্রেষ্ঠ? তিনি কি ইসরাইলের সঙ্গে ঝগড়া করেছিলেন, না তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন? 26হিষ্‌বোনে ও তার আশেপাশের এলাকায়, অরোয়েরে ও তার আশেপাশের এলাকায় এবং অর্ণোনের তীর ধরে সমস্ত নগরে তিনশত বছর ধরে ইসরাইল বাস করছে; এত দিনের মধ্যে আপনারা কেন সেসব ফিরিয়ে নেননি? 27আমি তো আপনাদের বিরুদ্ধে কোন ক্ষতি করি নি; কিন্তু আমার সঙ্গে যুদ্ধ করাতে আপনি আমার প্রতি অন্যায় করছেন; বিচারকর্তা মাবুদ আজ বনি-ইসরাইল ও অম্মোনীয়দের মধ্যে বিচার করুন। 28কিন্তু যিপ্তহের প্রেরিত এসব কথায় অম্মোনীয়দের বাদশাহ্‌ কান দিলেন না।
যিপ্তহের ওয়াদা
29পরে মাবুদের রূহ্‌ যিপ্তহের উপরে আসলেন, আর তিনি গিলিয়দ ও মানশা প্রদেশ দিয়ে গিলিয়দের মিস্‌পীতে গমন করলেন এবং গিলিয়দের মিস্‌পী থেকে অম্মোনীয়দের কাছে গেলেন। 30আর যিপ্তহ মাবুদের উদ্দেশে মানত করে বললেন, তুমি যদি অম্মোনীয়দেরকে নিশ্চয় আমার হাতে তুলে দাও, 31তবে অম্মোনীয়দের কাছ থেকে যখন আমি সহিসালামতে ফিরে আসবো, তখন যাকিছু আমার বাড়ির দরজা থেকে বের হয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসবে, তা নিশ্চয় মাবুদেরই হবে, আর আমি তা পোড়ানো-কোরবানী হিসেবে কোরবানী করবো। 32পরে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য তাদের কাছে পার হয়ে গেলে মাবুদ তাদেরকে তাঁর হাতে তুলে দিলেন। 33তাতে তিনি অরোয়ের থেকে মিন্নীতের কাছ পর্যন্ত বিশটি নগরে এবং আবেল-করামীম পর্যন্ত মহাসংহারে তাদেরকে সংহার করলেন, এভাবে অম্মোনীয়রা বনি-ইসরাইলদের সাক্ষাতে নত হল।
যিপ্তহের কন্যা
34পরে যিপ্তহ মিস্‌পায় তাঁর নিজের বাড়িতে আসলেন, আর দেখ, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য তাঁর কন্যা খঞ্জনি হাতে নৃত্য করতে করতে বাইরে আসছিল। সে তাঁর একমাত্র সন্তান, সে ছাড়া তাঁর আর কোন পুত্র বা কন্যা ছিল না। 35তখন তাকে দেখামাত্র তিনি কাপড় ছিঁড়ে বললেন, হায় হায়, কন্যা আমার! তুমি আমাকে বড় ব্যাকুল করলে; আমার কষ্টদায়কদের মধ্যে তুমি এক জন হলে; কিন্তু আমি মাবুদের কাছে মুখ খুলেছি, আর অন্যথা করতে পারব না। 36সে তাঁকে বললো, হে আমার পিতা, তুমি মাবুদের কাছে মুখ খুলেছ, তোমার মুখ দিয়ে যে কথা বের হয়েছে, সেই অনুসারে তুমি আমার প্রতি কর, কেননা মাবুদ তোমার জন্য তোমার দুশমন অম্মোনীয়দের উপর প্রতিশোধ নিয়েছেন। 37পরে সে তার পিতাকে বললো, আমার জন্য একটি কাজ করা হোক; আমাকে দুই মাসের জন্য বিদায় দাও এবং আমি পর্বতে গিয়ে আমার কুমারীত্বের বিষয়ে সখীদেরকে নিয়ে মাতম করি। 38তিনি বললেন, যাও; আর তাকে দুই মাসের জন্য পাঠিয়ে দিলেন। তখন সে তাঁর সখীদের সঙ্গে গিয়ে পর্বতের উপরে গিয়ে মাতম করলো কারণ তার কখনও বিয়ে হবে না। 39পরে দুই মাস গত হলে সে পিতার কাছে ফিরে এল; পিতা যে মানত করেছিলেন, সেই অনুসারে তার প্রতি করলেন; সে পুরুষের পরিচয় পায় নি। 40আর ইসরাইলের মধ্যে এই রীতি প্রচলিত হল যে, প্রতি বছর গিলিয়দীয় যিপ্তহের কন্যার জন্য বিলাপ করতে ইসরাইলের কন্যারা বছরের মধ্যে চার দিনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যেত।

Currently Selected:

কাজীগণ 11: BACIB

Highlight

Share

Copy

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy