লূক ১১
১১
নানা বিষয়ে যীশুর উপদেশ
প্রার্থনার বিষয়ে শিক্ষা
1 এক সময়ে তিনি কোন স্থানে প্রার্থনা করিতেছিলেন; যখন শেষ করিলেন, তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু, আমাদিগকে প্রার্থনা করিতে শিক্ষা দিউন, যেমন যোহনও আপন শিষ্যদিগকে শিক্ষা দিয়াছিলেন। 2 তিনি #মথি ৬:৯-১৩; ৭:৭-১১ তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বলিও, পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক। 3 তোমার রাজ্য আইসুক। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদিগকে দেও। 4 আর আমাদের পাপ সকল ক্ষমা কর; কেননা আমরাও আপনাদের প্রত্যেক অপরাধীকে ক্ষমা করি। আর আমাদিগকে পরীক্ষাতে আনিও না।
5 আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের মধ্যে কাহারও যদি বন্ধু থাকে, আর সে যদি মধ্যরাত্রে তাহার নিকটে গিয়া বলে, ‘বন্ধু আমাকে তিনখানা রুটি ধার দেও, 6 কেননা আমার এক বন্ধু পথে যাইতে যাইতে আমার কাছে আসিয়াছেন, তাঁহার সম্মুখে রাখিবার আমার কিছুই নাই; 7 তাহা হইলে সেই ব্যক্তি ভিতরে থাকিয়া কি এমন উত্তর দিবে, ‘আমাকে কষ্ট দিও না, এখন দ্বার বদ্ধ, এবং আমার সন্তানেরা আমার কাছে শুইয়া আছে, আমি উঠিয়া তোমাকে দিতে পারি না?’ 8 আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, সে যদ্যপি বন্ধু বলিয়া উঠিয়া তাহা না দেয়, তথাপি উহার আগ্রহ প্রযুক্ত উঠিয়া উহার যত প্রয়োজন, তাহা দিবে। 9 আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; অন্বেষণ কর, পাইবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। 10 কেননা যে কেহ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে, এবং যে অন্বেষণ করে, সে পায়; আর যে দ্বারে আঘাত করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। 11 তোমাদের মধ্যে এমন পিতা কে, যাহার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে? কিম্বা মাছ চাহিলে মাছের পরিবর্তে সাপ দিবে? 12 কিম্বা ডিম চাহিলে তাহাকে বৃশ্চিক দিবে? 13 অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে পবিত্র আত্মা দান করিবেন।
ভূতদের বিষয়ে শিক্ষা
14 আর #মথি ১২:২২-২৯,৪৩-৪৫; মার্ক ৩:২৩-২৭ তিনি একটা ভূত ছাড়াইয়াছিলেন, সে গোঁগা। ভূত বাহির হইলে সেই গোঁগা কথা কহিতে লাগিল; তাহাতে লোকেরা আশ্চর্য জ্ঞান করিল। 15 কিন্তু তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিল, এই ব্যক্তি ভূতগণের অধিপতি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়ায়। 16 আর কেহ কেহ পরীক্ষা ভাবে তাঁহার কাছে আকাশ হইতে কোন চিহ্ন চাহিল। 17 কিন্তু তিনি তাহাদের মনের ভাব জানিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, যে কোন রাজ্য আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা উচ্ছিন্ন হয়, এবং গৃহ গৃহের বিপক্ষ হইলে পতিত হয়। 18 আর শয়তানও যদি আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তবে তাহার রাজ্য কি প্রকারে স্থির থাকিবে? কেননা তোমরা বলিতেছ, আমি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই। 19 আর আমি যদি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের সন্তানেরা কাহার দ্বারা ছাড়ায়? এই জন্য তাহারাই তোমাদের বিচারকর্তা হইবে। 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের অঙ্গুলি দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে। 21 সেই বলবান ব্যক্তি যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থাকিয়া আপন বাটী রক্ষা করে, তখন তাহার সমপত্তি নিরাপদে থাকে। 22 কিন্তু যিনি তাহা হইতে অধিক বলবান, তিনি আসিয়া যখন তাহাকে পরাজিত করেন, তখন তাহার সর্বাঙ্গরক্ষক যে সজ্জায় তাহার ভরসা ছিল, তাহা হরণ করিয়া লন, ও তাহার লুঠ দ্রব্য বিতরণ করেন। 23 যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ, এবং যে আমার সহিত কুড়ায় না, সে ছাড়াইয়া ফেলে। 24 যখন অশুচি আত্মা মনুষ্য হইতে বাহির হইয়া যায়, তখন জলবিহীন নানা স্থান দিয়া ভ্রমণ করতঃ বিশ্রামের অন্বেষণ করে; কিন্তু না পাইয়া বলে, আমি যেখান হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি, আমার সেই গৃহে ফিরিয়া যাই। 25 পরে আসিয়া তাহা মার্জিত ও শোভিত দেখে। 26 তখন সে গিয়া আপনা হইতে দুষ্ট অপর সাতটা আত্মাকে সঙ্গে লইয়া আইসে, এবং তাহারা সেই স্থানে প্রবেশ করিয়া বাস করে; তাহাতে সেই মনুষ্যের প্রথম দশা হইতে শেষ দশা আরও মন্দ হয়।
27 তিনি এই সকল কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে ভিড়ের মধ্য হইতে কোন একজন স্ত্রীলোক উচ্চৈঃস্বরে তাঁহাকে বলিল, ধন্য সেই গর্ভ, যাহা আপনাকে ধারণ করিয়াছিল, আর সেই স্তন, যাহার দুগ্ধ আপনি পান করিয়াছিলেন। 28 তিনি কহিলেন, সত্য, কিন্তু বরং ধন্য তাহারাই, যাহারা ঈশ্বরের বাক্য শুনিয়া পালন করে।
সরল হইবার বিষয়ে শিক্ষা
29 পরে #মথি ১২:৩৯-৪২ তাঁহার নিকটে উত্তর উত্তর অনেক লোকের সমাগম হইলে তিনি বলিতে লাগিলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট, ইহারা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 30 কারণ যোনা যেমন নীনবীয়দের কাছে চিহ্নস্বরূপ হইয়াছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও এই কালের লোকদের নিকটে হইবেন। 31 দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন, কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন; আর দেখ, শলোমন হইতেও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32 নীনবীয় লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে; কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
33 প্রদীপ জ্বালিয়া কেহ গুপ্ত কুঠরিতে কিম্বা ঢাকনার নিচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, যেন, যাহারা ভিতরে যায়, তাহারা আলো দেখিতে পায়। 34 তোমার চক্ষুই শরীরের প্রদীপ; তোমার চক্ষু যখন সরল হয়, তখন তোমার সমুদয় শরীরও দীপ্তিময় হয়; কিন্তু চক্ষু মন্দ হইলে তোমার শরীরও অন্ধকারময় হয়। 35 অতএব দেখিও, তোমার অন্তরে যে দীপ্তি আছে, তাহা অন্ধকার কি না। 36 বাস্তবিক, তোমার সমুদয় শরীর যদি দীপ্তিময় হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজ তেজে তোমাকে দীপ্তি দান করে, তেমনি তোমার শরীর সম্পূর্ণরূপে দীপ্তিময় হইবে।
আন্তরিক শুচিতা আবশ্যক, এই বিষয়ে শিক্ষা
37 তিনি কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে একজন ফরীশী তাঁহাকে ভোজনের নিমন্ত্রণ করিল; আর তিনি ভিতরে গিয়া ভোজনে বসিলেন। 38 ফরীশী দেখিয়া আশ্চর্য জ্ঞান করিল যে, ভোজনের অগ্রে তিনি স্নান করেন নাই। 39 কিন্তু প্রভু তাহাকে কহিলেন, তোমরা ফরীশীরা ত পানপাত্র ও ভোজনপাত্র বাহিরে পরিষ্কার করিয়া থাক, কিন্তু তোমাদের ভিতরে দৌরাত্ম্য ও দুষ্টতা ভরা। 40 নির্বোধেরা, যিনি বাহিরের ভাগ নির্মাণ করিয়াছেন, তিনি কি ভিতরের ভাগও নির্মাণ করেন নাই? 41 বরং ভিতরে যাহা যাহা আছে, তাহা দান কর, আর দেখ, তোমাদের পক্ষে সকলই শুচি। 42 কিন্তু হা ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা পুদিনা, তেজপত্র ও সকল প্রকার শাকের দশমাংশ দান করিয়া থাক, আর ন্যায়বিচার ও ঈশ্বর-প্রেম উপেক্ষা করিয়া থাক; কিন্তু এই সকল পালন করা, এবং ঐ সকল পরিত্যাগ না করা, তোমাদের উচিত ছিল। 43 হা ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা সমাজ-গৃহে প্রধান আসন, ও হাট বাজারে লোকদের মঙ্গলবাদ ভালবাস। 44 ধিক্ তোমাদিগকে, কারণ তোমরা এমন গুপ্ত কবরের তুল্য, যাহার উপর দিয়া লোকে না জানিয়া যাতায়াত করে।
45 তখন ব্যবস্থাবেত্তাদের একজন উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিল, হে গুরু, এই কথা বলিয়া আপনি আমাদেরও অপমান করিতেছেন। 46 তিনি কহিলেন, হা ব্যবস্থাবেত্তারা, ধিক্ তোমাদিগকেও, কেননা তোমরা মনুষ্যদের উপরে দুর্বহ বোঝা চাপাইয়া দিয়া থাক, কিন্তু আপনারা একটি অঙ্গুলি দিয়া সেই সকল বোঝা স্পর্শ কর না। 47 ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা ভাববাদীদের কবর গাঁথিয়া থাক, আর তোমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁহাদিগকে বধ করিয়াছিল। 48 সুতরাং তোমরা সাক্ষী হইতেছ, এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের কর্মের অনুমোদন করিতেছ; কেননা তাহারা তাঁহাদিগকে বধ করিয়াছিল, আর তোমরা তাঁহাদের কবর গাঁথিয়া থাক। 49 এই কারণ ঈশ্বরের প্রজ্ঞাও কহিলেন, আমি তাহাদের নিকটে ভাববাদী ও প্রেরিতদিগকে প্রেরণ করিব, আর তাহাদের মধ্যে তাহারা কাহাকে কাহাকেও বধ করিবে, ও তাড়না করিবে, 50 যেন জগতের পত্তনাবধি যত ভাববাদীর রক্তপাত হইয়াছে, তাহার প্রতিশোধ এই কালের লোকদের কাছে লওয়া যায়- 51 হেবলের রক্ত অবধি সেই সখরিয়ের রক্ত পর্যন্ত, যিনি যজ্ঞবেদি ও মন্দিরের মধ্যস্থানে নিহত হইয়াছিলেন #আদি ৪:৮; ২ বংশা ২৪:২০ হাঁ, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, এই কালের লোকদের কাছে তাহার প্রতিশোধ লওয়া যাইবে। 52 হা ব্যবস্থাবেত্তারা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা জ্ঞানের চাবি হরণ করিয়া লইয়াছ; আপনারা প্রবেশ করিলে না, এবং যাহারা প্রবেশ করিতেছিল, তাহাদিগকেও বাধা দিলে।
53 তিনি সেই স্থান হইতে বাহির হইয়া আসিলে অধ্যাপক ও ফরীশীগণ তাঁহাকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিতে, ও নানা বিষয়ে কথা বলাইবার জন্য উত্তেজিত করিতে লাগিল, 54 তাঁহার মুখের কথা ধরিবার জন্য ফাঁদ পাতিয়া রহিল।
Zur Zeit ausgewählt:
লূক ১১: বিবিএস
Markierung
Teilen
Kopieren

Möchtest du deine gespeicherten Markierungen auf allen deinen Geräten sehen? Erstelle ein kostenloses Konto oder melde dich an.
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.
লূক ১১
১১
নানা বিষয়ে যীশুর উপদেশ
প্রার্থনার বিষয়ে শিক্ষা
1 এক সময়ে তিনি কোন স্থানে প্রার্থনা করিতেছিলেন; যখন শেষ করিলেন, তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু, আমাদিগকে প্রার্থনা করিতে শিক্ষা দিউন, যেমন যোহনও আপন শিষ্যদিগকে শিক্ষা দিয়াছিলেন। 2 তিনি #মথি ৬:৯-১৩; ৭:৭-১১ তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন বলিও, পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক। 3 তোমার রাজ্য আইসুক। আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রতিদিন আমাদিগকে দেও। 4 আর আমাদের পাপ সকল ক্ষমা কর; কেননা আমরাও আপনাদের প্রত্যেক অপরাধীকে ক্ষমা করি। আর আমাদিগকে পরীক্ষাতে আনিও না।
5 আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের মধ্যে কাহারও যদি বন্ধু থাকে, আর সে যদি মধ্যরাত্রে তাহার নিকটে গিয়া বলে, ‘বন্ধু আমাকে তিনখানা রুটি ধার দেও, 6 কেননা আমার এক বন্ধু পথে যাইতে যাইতে আমার কাছে আসিয়াছেন, তাঁহার সম্মুখে রাখিবার আমার কিছুই নাই; 7 তাহা হইলে সেই ব্যক্তি ভিতরে থাকিয়া কি এমন উত্তর দিবে, ‘আমাকে কষ্ট দিও না, এখন দ্বার বদ্ধ, এবং আমার সন্তানেরা আমার কাছে শুইয়া আছে, আমি উঠিয়া তোমাকে দিতে পারি না?’ 8 আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, সে যদ্যপি বন্ধু বলিয়া উঠিয়া তাহা না দেয়, তথাপি উহার আগ্রহ প্রযুক্ত উঠিয়া উহার যত প্রয়োজন, তাহা দিবে। 9 আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; অন্বেষণ কর, পাইবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। 10 কেননা যে কেহ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে, এবং যে অন্বেষণ করে, সে পায়; আর যে দ্বারে আঘাত করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। 11 তোমাদের মধ্যে এমন পিতা কে, যাহার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে? কিম্বা মাছ চাহিলে মাছের পরিবর্তে সাপ দিবে? 12 কিম্বা ডিম চাহিলে তাহাকে বৃশ্চিক দিবে? 13 অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে পবিত্র আত্মা দান করিবেন।
ভূতদের বিষয়ে শিক্ষা
14 আর #মথি ১২:২২-২৯,৪৩-৪৫; মার্ক ৩:২৩-২৭ তিনি একটা ভূত ছাড়াইয়াছিলেন, সে গোঁগা। ভূত বাহির হইলে সেই গোঁগা কথা কহিতে লাগিল; তাহাতে লোকেরা আশ্চর্য জ্ঞান করিল। 15 কিন্তু তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিল, এই ব্যক্তি ভূতগণের অধিপতি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়ায়। 16 আর কেহ কেহ পরীক্ষা ভাবে তাঁহার কাছে আকাশ হইতে কোন চিহ্ন চাহিল। 17 কিন্তু তিনি তাহাদের মনের ভাব জানিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, যে কোন রাজ্য আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তাহা উচ্ছিন্ন হয়, এবং গৃহ গৃহের বিপক্ষ হইলে পতিত হয়। 18 আর শয়তানও যদি আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তবে তাহার রাজ্য কি প্রকারে স্থির থাকিবে? কেননা তোমরা বলিতেছ, আমি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই। 19 আর আমি যদি বেল্সবূলের দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের সন্তানেরা কাহার দ্বারা ছাড়ায়? এই জন্য তাহারাই তোমাদের বিচারকর্তা হইবে। 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের অঙ্গুলি দ্বারা ভূত ছাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে। 21 সেই বলবান ব্যক্তি যখন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত থাকিয়া আপন বাটী রক্ষা করে, তখন তাহার সমপত্তি নিরাপদে থাকে। 22 কিন্তু যিনি তাহা হইতে অধিক বলবান, তিনি আসিয়া যখন তাহাকে পরাজিত করেন, তখন তাহার সর্বাঙ্গরক্ষক যে সজ্জায় তাহার ভরসা ছিল, তাহা হরণ করিয়া লন, ও তাহার লুঠ দ্রব্য বিতরণ করেন। 23 যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ, এবং যে আমার সহিত কুড়ায় না, সে ছাড়াইয়া ফেলে। 24 যখন অশুচি আত্মা মনুষ্য হইতে বাহির হইয়া যায়, তখন জলবিহীন নানা স্থান দিয়া ভ্রমণ করতঃ বিশ্রামের অন্বেষণ করে; কিন্তু না পাইয়া বলে, আমি যেখান হইতে বাহির হইয়া আসিয়াছি, আমার সেই গৃহে ফিরিয়া যাই। 25 পরে আসিয়া তাহা মার্জিত ও শোভিত দেখে। 26 তখন সে গিয়া আপনা হইতে দুষ্ট অপর সাতটা আত্মাকে সঙ্গে লইয়া আইসে, এবং তাহারা সেই স্থানে প্রবেশ করিয়া বাস করে; তাহাতে সেই মনুষ্যের প্রথম দশা হইতে শেষ দশা আরও মন্দ হয়।
27 তিনি এই সকল কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে ভিড়ের মধ্য হইতে কোন একজন স্ত্রীলোক উচ্চৈঃস্বরে তাঁহাকে বলিল, ধন্য সেই গর্ভ, যাহা আপনাকে ধারণ করিয়াছিল, আর সেই স্তন, যাহার দুগ্ধ আপনি পান করিয়াছিলেন। 28 তিনি কহিলেন, সত্য, কিন্তু বরং ধন্য তাহারাই, যাহারা ঈশ্বরের বাক্য শুনিয়া পালন করে।
সরল হইবার বিষয়ে শিক্ষা
29 পরে #মথি ১২:৩৯-৪২ তাঁহার নিকটে উত্তর উত্তর অনেক লোকের সমাগম হইলে তিনি বলিতে লাগিলেন, এই কালের লোকেরা দুষ্ট, ইহারা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। 30 কারণ যোনা যেমন নীনবীয়দের কাছে চিহ্নস্বরূপ হইয়াছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও এই কালের লোকদের নিকটে হইবেন। 31 দক্ষিণ দেশের রাণী বিচারে এই কালের লোকদের সহিত উঠিয়া ইহাদিগকে দোষী করিবেন, কেননা শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনিবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত হইতে আসিয়াছিলেন; আর দেখ, শলোমন হইতেও মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন। 32 নীনবীয় লোকেরা বিচারে এই কালের লোকদের সহিত দাঁড়াইয়া ইহাদিগকে দোষী করিবে; কেননা তাহারা যোনার প্রচারে মন ফিরাইয়াছিল, আর দেখ, যোনা হইতে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
33 প্রদীপ জ্বালিয়া কেহ গুপ্ত কুঠরিতে কিম্বা ঢাকনার নিচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, যেন, যাহারা ভিতরে যায়, তাহারা আলো দেখিতে পায়। 34 তোমার চক্ষুই শরীরের প্রদীপ; তোমার চক্ষু যখন সরল হয়, তখন তোমার সমুদয় শরীরও দীপ্তিময় হয়; কিন্তু চক্ষু মন্দ হইলে তোমার শরীরও অন্ধকারময় হয়। 35 অতএব দেখিও, তোমার অন্তরে যে দীপ্তি আছে, তাহা অন্ধকার কি না। 36 বাস্তবিক, তোমার সমুদয় শরীর যদি দীপ্তিময় হয়, কোনও অংশ অন্ধকারময় না থাকে, তবে প্রদীপ যেমন নিজ তেজে তোমাকে দীপ্তি দান করে, তেমনি তোমার শরীর সম্পূর্ণরূপে দীপ্তিময় হইবে।
আন্তরিক শুচিতা আবশ্যক, এই বিষয়ে শিক্ষা
37 তিনি কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে একজন ফরীশী তাঁহাকে ভোজনের নিমন্ত্রণ করিল; আর তিনি ভিতরে গিয়া ভোজনে বসিলেন। 38 ফরীশী দেখিয়া আশ্চর্য জ্ঞান করিল যে, ভোজনের অগ্রে তিনি স্নান করেন নাই। 39 কিন্তু প্রভু তাহাকে কহিলেন, তোমরা ফরীশীরা ত পানপাত্র ও ভোজনপাত্র বাহিরে পরিষ্কার করিয়া থাক, কিন্তু তোমাদের ভিতরে দৌরাত্ম্য ও দুষ্টতা ভরা। 40 নির্বোধেরা, যিনি বাহিরের ভাগ নির্মাণ করিয়াছেন, তিনি কি ভিতরের ভাগও নির্মাণ করেন নাই? 41 বরং ভিতরে যাহা যাহা আছে, তাহা দান কর, আর দেখ, তোমাদের পক্ষে সকলই শুচি। 42 কিন্তু হা ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা পুদিনা, তেজপত্র ও সকল প্রকার শাকের দশমাংশ দান করিয়া থাক, আর ন্যায়বিচার ও ঈশ্বর-প্রেম উপেক্ষা করিয়া থাক; কিন্তু এই সকল পালন করা, এবং ঐ সকল পরিত্যাগ না করা, তোমাদের উচিত ছিল। 43 হা ফরীশীরা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা সমাজ-গৃহে প্রধান আসন, ও হাট বাজারে লোকদের মঙ্গলবাদ ভালবাস। 44 ধিক্ তোমাদিগকে, কারণ তোমরা এমন গুপ্ত কবরের তুল্য, যাহার উপর দিয়া লোকে না জানিয়া যাতায়াত করে।
45 তখন ব্যবস্থাবেত্তাদের একজন উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিল, হে গুরু, এই কথা বলিয়া আপনি আমাদেরও অপমান করিতেছেন। 46 তিনি কহিলেন, হা ব্যবস্থাবেত্তারা, ধিক্ তোমাদিগকেও, কেননা তোমরা মনুষ্যদের উপরে দুর্বহ বোঝা চাপাইয়া দিয়া থাক, কিন্তু আপনারা একটি অঙ্গুলি দিয়া সেই সকল বোঝা স্পর্শ কর না। 47 ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা ভাববাদীদের কবর গাঁথিয়া থাক, আর তোমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁহাদিগকে বধ করিয়াছিল। 48 সুতরাং তোমরা সাক্ষী হইতেছ, এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদের কর্মের অনুমোদন করিতেছ; কেননা তাহারা তাঁহাদিগকে বধ করিয়াছিল, আর তোমরা তাঁহাদের কবর গাঁথিয়া থাক। 49 এই কারণ ঈশ্বরের প্রজ্ঞাও কহিলেন, আমি তাহাদের নিকটে ভাববাদী ও প্রেরিতদিগকে প্রেরণ করিব, আর তাহাদের মধ্যে তাহারা কাহাকে কাহাকেও বধ করিবে, ও তাড়না করিবে, 50 যেন জগতের পত্তনাবধি যত ভাববাদীর রক্তপাত হইয়াছে, তাহার প্রতিশোধ এই কালের লোকদের কাছে লওয়া যায়- 51 হেবলের রক্ত অবধি সেই সখরিয়ের রক্ত পর্যন্ত, যিনি যজ্ঞবেদি ও মন্দিরের মধ্যস্থানে নিহত হইয়াছিলেন #আদি ৪:৮; ২ বংশা ২৪:২০ হাঁ, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, এই কালের লোকদের কাছে তাহার প্রতিশোধ লওয়া যাইবে। 52 হা ব্যবস্থাবেত্তারা, ধিক্ তোমাদিগকে, কেননা তোমরা জ্ঞানের চাবি হরণ করিয়া লইয়াছ; আপনারা প্রবেশ করিলে না, এবং যাহারা প্রবেশ করিতেছিল, তাহাদিগকেও বাধা দিলে।
53 তিনি সেই স্থান হইতে বাহির হইয়া আসিলে অধ্যাপক ও ফরীশীগণ তাঁহাকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিতে, ও নানা বিষয়ে কথা বলাইবার জন্য উত্তেজিত করিতে লাগিল, 54 তাঁহার মুখের কথা ধরিবার জন্য ফাঁদ পাতিয়া রহিল।
Zur Zeit ausgewählt:
:
Markierung
Teilen
Kopieren

Möchtest du deine gespeicherten Markierungen auf allen deinen Geräten sehen? Erstelle ein kostenloses Konto oder melde dich an.
Copyright © 2023 Bangladesh Bible Society. All rights reserved.