শতপতির দাসের আরোগ্যলাভ

শতপতি ইহুদী ছিলেন না, তবুও তিনি যীশুর শক্তি ও কর্তৃত্বকে বুঝতে পেরেছিলেন। রোমীয় সমাজে স্তরবিন্যাস বা পদক্রমই ছিল সবকিছু। ক্ষমতার কাঠামো সবকিছুকে ও সবাইকে তাদের নির্দিষ্ট স্থানে ধরে রাখত। এই কাঠামোর অংশ হিসেবে শতপতি ভালভাবেই জানতেন উপরের পদস্থ নেতাদের ক্ষমতা কতটা প্রভাবশালী। তাই তিনি সঠিকভাবেই যীশুকে স্বাধীনতা দিলেন যেন তিনি কষ্ট করে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত না আসেন, বরং শুধু একটি বাক্য উচ্চারণ করেই দূর থেকে তাঁর দাসকে সুস্থ করে দেন। তিনি বুঝেছিলেন, এই ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন রাব্বির সঙ্গে একটি ধর্মীয় আয়োজন করার চেয়ে সরাসরি অনুরোধ করাই যথেষ্ট, যাতে তিনি তাঁর অলৌকিক শক্তি তাঁর দাসের দিকে প্রেরণ করেন।

আমরা যারা যীশুকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি, অনেক সময় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে অতিরিক্ত ধর্মীয় মনোভাব ও আচারনিষ্ঠ হয়ে যাই, যখন বাস্তবে তিনি আমাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি কাছাকাছি, এবং আমাদের জানা থেকেও অনেক বেশি বাস্তব! তিনি শুধু আনুষ্ঠানিক, সমষ্টিগত সভাতেই আমাদের সঙ্গে মিলিত হন না, তিনি আমাদের জীবনের দৈনন্দিন মুহূর্তগুলিতেও আমাদের সঙ্গে থাকেন।

আমরা অনেক সময় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিখুঁত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—যোগ্য পরিবেশ সাজানোর চেষ্টা করি; অথচ এর পরিবর্তে আমরা তাঁকে আমাদের প্রতিটি সরল ও অপরিশোধিত দিনের প্রতিটি মুহূর্তে আমন্ত্রণ জানাতে পারি, যাতে আমরা তাঁর উপস্থিতিতে থাকতে পারি।

শতপতি নিশ্চয়ই তাঁর কর্মচারীদের কাছ থেকে যীশুর অলৌকিক ক্ষমতার কথা শুনেছিলেন, এবং সেই কারণেই বিশ্বাস করেছিলেন যে যীশু তাঁর দাসকে সুস্থ করতে পারবেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি নিজেকে যীশুকে ঘরে আমন্ত্রণ জানানোর যোগ্য মনে করেন না, যা প্রমাণ করে তিনি এটি উপলব্ধি করেছিলেন যে যীশু আসলে কে, এবং তাঁর মহিমা ও সর্বশক্তিমানের তুলনায় নিজের পদমর্যাদা বা সাফল্য কতটা তুচ্ছ।

যীশু তাঁর বিশ্বাসের প্রশংসা করেন এবং যেখানে ছিলেন সেখান থেকেই শতপতির দাসকে সুস্থ করলেন! এটি আশ্চর্যজনক নয় কি, একজন অ-ইহুদীর বিশ্বাস যীশুর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এবং তাঁকে তার পক্ষে কাজ করতে প্রেরণা দিয়েছিলেন। এটি কি আপনাকে উৎসাহিত করে যীশুকে তাঁর বাক্যের মাধ্যমে এবং মানুষের জীবনে তাঁর কার্যকলাপের মাধ্যমে আরও গভীরভাবে জানার জন্য? যখন আপনি তাঁকে সত্যিই জানবেন, তখন আপনি নিজের জীবনে অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য তাঁর উপর ভরসা না করে থাকতে পারবেন না।