আদিপুস্তক ৩৫

৩৫
যাকোবের বৈথেলে গমন ও রাহেলের মৃত্যু
1 পরে ঈশ্বর যাকোবকে কহিলেন, তুমি উঠ, বৈথেলে গিয়া সেই স্থানে বাস কর, এবং তোমার ভ্রাতা এষৌর সম্মুখ হইতে তোমার পলায়নকালে যে ঈশ্বর তোমাকে দর্শন দিয়াছিলেন, তাঁহার উদ্দেশে সেই স্থানে যজ্ঞবেদি নির্মাণ কর। 2 তখন যাকোব আপন পরিজন ও সঙ্গী লোক সকলকে কহিলেন, তোমাদের কাছে যে সকল বিজাতীয় দেবতা আছে তাহাদিগকে দূর কর এবং শুচি হও, ও অন্য বস্ত্র পর। 3 আর আইস, আমরা উঠিয়া বৈথেলে যাই; যে ঈশ্বর আমার সঙ্কটের দিনে আমাকে প্রার্থনার উত্তর দিয়াছিলেন, এবং আমার গমনপথে সহবর্তী ছিলেন, তাঁহার উদ্দেশে আমি সেই স্থানে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিব। 4 তাহাতে তাহারা আপনাদের হস্তগত বিজাতীয় দেবতা ও কর্ণকুণ্ডল সকল যাকোবকে দিল, এবং তিনি ঐ সকল শিখিমের নিকটবর্তী এলন বৃক্ষের তলে পুঁতিয়া রাখিলেন। 5 পরে তাঁহারা তথা হইতে যাত্রা করিলেন। তখন চারিদিকের নগরসমূহে ঈশ্বর হইতে ত্রাস উপস্থিত হইল, তাই তথাকার লোকেরা যাকোবের পুত্রদের পশ্চাৎ ধাবমান হইল না।
6 পরে যাকোব ও তাঁহার সঙ্গীরা সকলে কনান দেশস্থ লূসে অর্থাৎ বৈথেলে উপস্থিত হইলেন। 7 তথায় তিনি এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিয়া সেই স্থানের নাম এল্‌-বৈথেল [বৈথেলের ঈশ্বর] রাখিলেন; কারণ ভ্রাতার সম্মুখ হইতে তাঁহার পলায়নকালে ঈশ্বর সেই স্থানে তাঁহাকে দর্শন দিয়াছিলেন। 8 আর রিবিকার দবোরা নাম্নী ধাত্রীর মৃত্যু হইল, এবং বৈথেলের অধঃস্থিত অলোন বৃক্ষের তলে তাহার কবর হইল, এবং সেই স্থানের নাম অলোন্‌-বাখুৎ [রোদন-বৃক্ষ] হইল।
9 পদ্দন্‌-অরাম হইতে যাকোব ফিরিয়া আসিলে ঈশ্বর তাঁহাকে পুনর্বার দর্শন দিয়া আশীর্বাদ করিলেন। 10 ফলতঃ ঈশ্বর তাঁহাকে কহিলেন, তোমার নাম যাকোব; লোকে তোমাকে আর যাকোব বলিবে না, তোমার নাম ইস্রায়েল হইবে; আর তিনি তাঁহার নাম ইস্রায়েল রাখিলেন। 11 ঈশ্বর তাঁহাকে আরও কহিলেন, আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও; তোমা হইতে এক জাতি, এমন কি, জাতিসমাজ উৎপন্ন হইবে, আর তোমার কটি হইতে রাজগণ উৎপন্ন হইবে। 12 আর আমি অব্রাহামকে ও ইস্‌হাককে যে দেশ দান করিয়াছি সেই দেশ তোমাকে ও তোমার ভাবী বংশকে দিব। 13 সেই স্থানে তাঁহার সহিত কথোপকথন করিয়া ঈশ্বর তাঁহার নিকট হইতে ঊর্ধ্বগমন করিলেন। 14 আর যাকোব সেই কথোপকথন স্থানে এক স্তম্ভ, প্রস্তরের স্তম্ভ, স্থাপন করিয়া তাহার উপরে পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করিলেন ও তৈল ঢালিয়া দিলেন। 15 এবং যে স্থানে ঈশ্বর তাঁহার সহিত কথা কহিলেন, যাকোব সেই স্থানের নাম বৈথেল রাখিলেন।
16 পরে তাঁহারা বৈথেল হইতে প্রস্থান করিলেন, আর ইফ্রাথে উপস্থিত হইবার অল্প পথ অবশিষ্ট থাকিতে রাহেলের প্রসব-বেদনা হইল; এবং তাঁহার প্রসব করিতে বড় কষ্ট হইল। 17 আর প্রসব ব্যথা কঠিন হইলে ধাত্রী তাঁহাকে কহিল, ভয় করিও না, কারণ এবারও তোমার পুত্রসন্তান হইবে। 18 পরে তাঁহার মৃত্যু হইল, আর প্রাণবিয়োগ সময়ে তিনি পুত্রের নাম বিনোনী [আমার কষ্টের পুত্র] রাখিলেন, কিন্তু তাহার পিতা তাহার নাম বিন্যামীন [দক্ষিণ হস্তের পুত্র] রাখিলেন। 19 এইরূপে রাহেলের মৃত্যু হইল, এবং ইফ্রাথ অর্থাৎ বৈৎলেহমের পথের পার্শ্বে তাঁহার কবর হইল। 20 পরে যাকোব তাঁহার কবরের উপরে এক স্তম্ভ স্থাপন করিলেন, রাহেলের সেই কবর-স্তম্ভ অদ্যাপি আছে।
21 পরে ইস্রায়েল তথা হইতে যাত্রা করিলেন, এবং মিগ্‌দল-এদরের ওপার্শ্বে তাম্বু স্থাপন করিলেন। 22 সেই দেশে ইস্রায়েলের অবস্থিতি কালে রূবেণ গিয়া তাঁহার পিতার বিল্‌হা নাম্নী উপপত্নীর সহিত শয়ন করিল, এবং ইস্রায়েল তাহা শুনিতে পাইলেন।
23 যাকোবের দ্বাদশ পুত্র। লেয়ার সন্তান; যাকোবের জ্যেষ্ঠ পুত্র রূবেণ, এবং শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন। 24 রাহেলের সন্তান; যোষেফ ও বিন্যামীন। 25 রাহেলের দাসী বিল্‌হার সন্তান; দান ও নপ্তালি। 26 লেয়ার দাসী সিল্পার সন্তান; গাদ ও আশের। ইহারা যাকোবের পুত্র, পদ্দন্‌-অরামে জন্মে।
ইস্‌হাকের মৃত্যু
এষৌর বংশাবলি
27 পরে কিরিয়থর্বের অর্থাৎ হিব্রোণের নিকটবর্তী মম্রি নামক যে স্থানে অব্রাহাম ও ইস্‌হাক প্রবাস করিয়াছিলেন, সেই স্থানে যাকোব আপন পিতা ইস্‌হাকের নিকটে উপস্থিত হইলেন।
28 ইস্‌হাকের বয়স একশত আশি বৎসর হইয়াছিল। 29 পরে ইস্‌হাক বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হইয়া প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন, এবং তাঁহার পুত্র এষৌ ও যাকোব তাঁহার কবর দিলেন।

醒目顯示

分享

複製

None

想在你所有裝置上儲存你的醒目顯示?註冊帳戶或登入