ইউভার্শন লোগো
সার্চ আইকন

লুক 8

8
যীশু ও তাঁর শিষ্যদের পরিচর্যায় নারীবৃন্দ
1এই ঘটনার পরে যীশু বহু গ্রাম ও নগরের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে প্রচার করতে লাগলেন এবং ঐসরাজ্যের শুভ সংবাদ9 সকলের কাছে পৌঁছে দিলেন।#লুক 4:43
2তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বারোজন শিষ্য ও কয়েকজন মহিলা —এঁরা নানারকম রোগ ও অপদেবতার হাত তেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন। মরিয়ম, যাঁর নাম ছিল মগ্দ্‌লিনী, যাঁর ভিতর থেকে সাতটি অপদেবতাকে বিতাড়িত করা হয়েছিল,#মার্ক 15:40-41; 16:9; লুক 23:49; 24:10 3হেরোদের কোষাধ্যক্ষ কুষের স্ত্রী যোহান্না, সুসান্না এবং আরও অনেকে এই মহিলাদের দলে ছিলেন। এঁরা যীশু ও তাঁর শিষ্যদেরর নিজেদের সঙ্গতি থেকে সাহায্য ও সেবা করতেন।
বীজ বপনের রূপক কাহিনী
(মথি 13:1-9; মার্ক 4:1-9)
4বিভিন্ন নগর থেকে বহু লোক তাঁর কাছে এসে এক জায়গায় জড়ো হল।#মথি 13:1-23; মার্ক 4:1-20 5যীশু তাদের একটি রূপক কাহিনী বললেনঃ একজন কৃষক মাঠে বীজ বুনতে গেল। বোনার সময় কিছু বীজ পথের উপর পড়ায় পদদলিত হল এবং পাখিরা এসে খেয়ে ফেলল। 6কিছু পড়ল পাথুরে জমিতে, সেখানে বীজ অঙ্কুরিত হল কিন্তু মাটিতে রস না থাকায় শুকিয়ে গেল। 7কিছু বীজ পড়ল কাঁটা ঝোপের মধ্যে, ফলে সেগুলির সঙ্গে সঙ্গে কাঁটা গাছও বেড়ে উঠে সেগুলিকে চাপা দিল। 8আর কিছু পড়ল ভাল জমিতে, সেখানে সেগুলি বড় হয়ে শতগুণ ফল দিল। এই কথা বলে তিনি উচ্চকণ্ঠে বললেন, ‘যার শোনবার মত কান আছে সে শুনক।’
রূপক কাহিনীর ব্যাখ্যা
(মথি 13:10-23; মার্ক 4:10-20)
9যীশুর শিষ্যেরা পরে তাঁকে ঐ রূপকের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন। 10তিনি বললেন, ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদের জানতে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অন্যদের কাছে তা রূপকের মাধ্যমে ব্যক্ত হয়েছে যেন তারা দেখেও দেখতে না পায়, শুনেও বুঝতে না পারে।#যিশা 6:9-10 11রূপকটি এই: ঐ বীজ হল ঈশ্বরের বাণী।#১ পিতর 1:23 12পথের উপরে বলতে তাদেরই বোঝান হয়েছে, যারা এই বাণী শোনে কিন্তু তারপর শয়তান এসে তাদের অন্তর থেকে সেই বাক্য হরণ করে নিয়ে যায়, যেন তারা বিশ্বাস করে মুক্তি না পায়। #১ করি 1:21; মার্ক 16:16 13পাথুরে জমির রূপক দিয়ে তাদেরই বিষয়ে বলা হয়েছে যারা এই বাণী শুনে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করে কিন্তু এদের ভিত্তি দৃঢ় নয়, এদের বিশ্বাস ক্ষণিকের, পরীক্ষা প্রলোভনের সম্মুখীন হলেই এরা পিছিয়ে পড়ে। 14কাঁটা ঝোপে পড়া বীজের রূপক দিয়ে তাদেরই কতা বলা হয়এছে, যারা এই বাণী শোনে কিন্তু জীবনের পথে এগিয়ে যেতে যেতে জাগতিক চিন্তাভাবনা, ধন-সম্পত্তি এবং সাংসারিক সুখভোগে আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তাই পরিণত ফল লাভ আর হয় না। 15ভাল মাটির রূপকের মানুষ তারাই, যারা সুদ্ধ ও সরল মনে এই বাণী শুনে হৃদয়ে ধারণ করে অধ্যবসায় সহকারে ফল উৎপন্ন করে।#প্রেরিত 16:14; হিব্রু 10:36; প্রকা 3:10
জীবনাচরণের রীতি
(মার্ক 4:21-25)
16প্রদীপ জ্বেলে কেউ পাত্র দিয়ে ঢেকে রাখে না, কিম্বা খাটের নিচে রাখে না কিন্তু বাতিদানের উপরেই রাখে যেন যারা ঘরের ভেতরে যাবে, তারা আলো দেখতে পায়।#মার্ক 4:21-25 #মথি 5:15
17এমন গুপ্ত কিছুই নেই যা প্রকাশ পাবে না এবং এমন লুকানো কিছুই নেই যা জানা যাবে না ও প্রকাশ পাবে না। 18সুতরাং কি ভাবে শুনছ, সে বিষয়ে সাবধান থেকো, কারণ যার কিছু আছে তাকে আরও দেওয়া হবে এবং যার কিছু নেই, তার বিবেচনায় তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে।
প্রভু যীশুর আপনজন
(মথি 12:46-50; মার্ক 3:31-35)
19এই সময়ে যীশুর মা ও ভাইয়েরা তাঁর কাছে এলেন, কিন্তু ভিড়ের জন্য তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না।#মথি 12:46-50; মার্ক 3:31-35 20তখন তাঁকে বলা হল, আপনার মা ও ভাইয়েরা আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। 21কিন্তু এর উত্তরে তিনি তাদের বললেন, যারা ঈশ্বরের বাণী শোনে এবং পালন করে, তারাই আমার মা ও ভাই।
প্রাকৃতিক শক্তির ওপরে প্রভু যীশুর কর্তৃত্ব
(মথি 8:23-27; মার্ক 4:35-41)
22একদিন যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে নিয়ে একটি নৌকাতে উঠে বললেন, চল আমরা হ্রদের ওপারে যাই। তাঁরা তখন নৌকা ছেড়ে দিলেন।#মথি 8:18; 23:17; মার্ক 4:35-41 23নৌকায় যেতে যেতে যীশু ঘুমিয়ে পড়লেন। এমন সময় হ্রদের বুকে প্রচণ্ড ঝড় উটল, নৌকা জলে ভরে যেতে লাগল। দারুণ সঙ্কটে পড়লেন তাঁরা। 24তাড়াতাড়ি তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে তাঁর গুম ভাঙ্গিয়ে বললেন, প্রভু, প্রভু, আমরা যে মরতে বসেছি। তিনি জেগে উঠে বাতাস আর উত্তাল তরঙ্গকে ধমক দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সব থেকে গেল, প্রশান্তি নেমে এল। 25তখন তিনি তাঁদের বললেন, তোমাদের বিশ্বাস কোথায়? এতে তাঁরা যেমন ভয় পেলেন, তেমনই অবাক হলেন এবং পরস্পর বলাবলি করতে লাগলেন, কে উনি? ঝড় ও জলকে ইনি আদেশ দেন এবং তারা তাঁর আদেশ পালন করে!
অপদেবতার পরাজয়
(মথি 8:28-34; মার্ক 5:1-20)
26তারপর তাঁরা গালীল সাগরের ওপারে গেরাসেনীদের অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছালেন।#মথি 8:28-34; মার্ক 5:1-20 27তীরে নামবার সঙ্গে সঙ্গে নগরের একটি অপদেবতাগ্রস্ত লোক তাঁর সামনে এসে উপস্থিত। অনেকদিন থেকেই সে কাপড় পরত না, বাড়িতেও থাকত না, থাকত কবরস্থানে। 28যীশুকে দেখেই সে চীৎকার করে উঠে তাঁর সামনে এসে পড়ে গেল, আর চেঁচিয়ে বলতে লাগল, হে পরাৎপর ঈশ্বরের পুত্র যীশু, আমার সঙ্গে আপনার কী সম্পর্ক? মিনতি করি, আমায় যন্ত্রণা দেবেন না। 29তার এই কথা বলার কারণ, তিনি সেই অপদেবতাটিকে ইতিমধ্যেই সেই লোকটির মধ্যে থেকে বার হয়ে যেতে আদেশ দিয়েছিলেন। এই অপদেবতাটি আগে অনেকবার তার উপরে ভর করেছে। লোকটিকে বেড়ী আর শিকল দিয়ে বেঁধে পাহারা দিয়ে রাখা হত। কিন্তু অপদেবতা ভর করলে সে সব বাঁধন ছিঁড়ে নির্জন স্থানে চলে যেত।
30যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার নাম কি? সে উত্তর দিল, বাহিনী। কারণ অনেকগুলি অপদেবতা একসঙ্গে তার ওপর ভর করেছিল। 31তারা তাঁকে অনুনয় করে বলতে লাগল, যেন তাদের রসাতলে যাওয়ার আদেশ না দেওয়া হয়। 32সেই সময় পাহাড়তলীতে বিরাট একপাল শূকর চরছিল। অপদেবতারা অনুনয় করে বলল, যেন তাদের ঐ শূকরগুলির উপর ভর করতে অনুমতি দেওয়া হয়। যীশু তাদের সেই অনুমতি দিলেন। 33তখন অপদেবতারা লোকটির ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে শূকরগুলির উপর ভর করল। ফলে শূকরের পালটি খাড়া পাড় বেয়ে নীচে হ্রদের দিকে সবেগে ছুটে গিয়ে জলে ডুবে মরল।
34যারা শূকর চরাচ্ছিল, তারা এই ব্যাপার দেখে ভয়ে পালিয়ে গেল এবং এই ঘটনার কথা শহরে, গাঁয়ে বলে বেড়াতে লাগল। 35তকন সবাই কি ঘটেছে জানার জন্য যীশুর কাছে এসে দেখল, অপদেবতার দল লোকটিকে ছেড়ে গেছে, সে জামা কাপড় পরে শান্তভাবে যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে। দেখে তারা ভয় পেয়ে গেল। 36অপদেবতাগ্রস্ত লোকটি কি ভাবে সুস্থ হয়েছিল, এ ঘটনা যারা দেখেছিল, তারা এদের সেইসব কথা বলল।
37তকন গেরাসেনী অঞ্চলের লোকেরা তাঁকে চলে যেতে অনুরোধ করল, কারণ তারা এই ঘটনায় ভীষণ ভয় পেয়েছিল, তখন যীশু নৌকায় উঠে ফিরে গেলেন। 38অপদেবতার কবলমুক্ত লোকটি তাঁর কাছে মিনতি করতে লাগল যেন, সে তাঁর সঙ্গে থাকতে পারে। কিন্তু যীশু তাকে ফিরিয়ে দিলেন, বললেন, 39তুমি বাড়িতে ফিরে যাও এবং ঈশ্বর তোমার জন্য যে মহৎ কাজ করেছেন, সেই কথা প্রচার কর। তখন সে ফিরে গেল এবং যীশু তার জন্য যে মহৎ কাজ করেছিলেন, নগরের চারিদিকে তা প্রচার করতে লাগল।
একটি নারীর আরোগ্যলাভ ও মৃত বালিকার জীবনদান
(মথি 9:18-26; মার্ক 5:21-43)
40হ্রদের ওপার থেকে যীশু ফিরে এলে তাঁর জন্য অপেক্ষমান জনতা তাঁকে স্বাগত জানাল।#মথি 9:18-26; মার্ক 5:21-43 41সেখানে যায়ীর নামে সমাজভবনের একজন অধ্যক্ষ এসেছিলেন, তিনি যীশুর পায়ে পড়ে তাঁকে তাঁর বাড়িতে যাবার জন্য কাতরভাবে আনুনয় করতে লাগলেন। 42কারণ তাঁর একটি মাত্র কন্যা তখন মৃত্যুশয্যায়, বয়স তার প্রায় বারো বৎসর।
যায়ীরের বাড়িতে যাওয়ার পথে চারিদিক থেকে ভিড় যীশুর ওপরে চেপে পড়েছিল। 43এই ভিড়ের রমধ্যে একটি নারী ছিল, সে বারো বছর ধরে প্রদর রোগে ভুগছিল। ডাক্তার কবিরাজের পিছনে সে তার সর্বস্ব ব্যয় করেছিল কিন্তু কেউ তাকে সুস্থ করতে পারেনি। 44এই নারী ভিড়ের মধ্যে যীশুর পিছনে এসে তাঁর জামার একটি কোণ স্পর্শ করল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে গেল। 45তখন যীশু জিজ্ঞাসা করলেন, কে আমাকে স্পর্শ করেছে? সকলে অস্বীকার করল। পিতর ও তাঁর সঙ্গীরা বললেন, গুরুদেব, চারিদিক থেকেই তো লোক ভিড় করে আপনার গায়ের ওপর পড়ছে। 46কিন্তু যীশু বললেন, কেউ নিশ্চয়ই আমাকে স্পর্শ করেছে, কারণ আমি বুঝতে পারলাম যে আমার ভিতর থেকে শক্তি নির্গত হয়েছে। 47সেই নারী যখন বুঝতে পারল যে, এ আর গোপন রাখা সম্ভব নয়, তখন সে কাঁপতে কাঁপতে তাঁর সামনে এসে মাটিতে পড়ে গেল এবং কেন সে তাঁকে স্পর্শ করেছিল এবং কিভাবে সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ হয়েছিল, সকলের সামনেই সেই কথা বলল। 48যীশু তাকে বললেন, ওগো মেয়ে, তোমার বিশ্বাস তোমাকে সুস্থ করেছে, শান্তিতে ফিরে যাও।#লুক 7:50 49তিনি যখন কথা বলছিলেন, সেই সময়ে সমাজভবনের অধ্যক্ষের বাড়ি থেকে একজন লোক এসে অধ্যক্ষকে বলল, আপনার কন্যা মারা গেছে, গুরুদেবকে আর কষ্ট দেবেন না। 50একথা শুনতে পেয়ে যীশু বললেন, ভয় করো না, শুধু বিশ্বাস কর, সে নিশ্চয়ই বাঁচবে। 51যীশু তাঁর বাড়িতে গেলেন। তিনি পিতর, যোহন ও যাকোব এবং মেয়েটির মা-বাবা ছাড়া আর কাউকে ঘরে ঢুকতে দিলেন না। 52সকলে মেয়েটির জন্য কাঁদছিল ও শোক প্রকাশ করছিল। তিনি তাদের বললেন, কেঁদ না, ও মারা যায়নি, ঘুমোচ্ছে।#লুক 7:13; যোহন 11:11 53তারা কিন্তু জানতো যে সে মারা গেছে, তাই তারা তাঁকে বিদ্রূপ করতে লাগল। 54কিন্তু তিনি মেয়েটির হাত ধরে বললেন,খুকু ওঠ, 55মেয়েটির দেহে প্রাণ ফিরে এল আর তক্ষুণি সে উঠে বসল। তখন যীশু তাকে কিছু খাবার দিতে বললেন। 56তার মা-বাবা বিস্ময়ে একেবারে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন কিন্তু তিনি তাঁদের এই ঘটনার কথা কাউকে বলতে নিষেধ করলেন।#লুক 5:14

বর্তমানে নির্বাচিত:

লুক 8: BENGALCL-BSI

হাইলাইট

শেয়ার

কপি

None

Want to have your highlights saved across all your devices? Sign up or sign in

YouVersion uses cookies to personalize your experience. By using our website, you accept our use of cookies as described in our Privacy Policy